বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশকে অলিম্পিক স্বর্ণপদকের গর্ব অনুভব করানো সেই মার্গারিটা মামুনের বাবা আব্দুল্লাহ আল-মামুন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। বিছানায় শুয়ে-শুয়েই দেখেছেন মেয়ের বিজয়-দৃশ্য।
আব্দুল্লাহ আল-মামুনের বাড়ি রাজশাহীর কাশিপুর গ্রামে। সেখানে থাকেন তার বোন দিনা জহুরা। গতকাল কথা হয় তার সঙ্গে।
মার্গারিটাকে কাশিপুরবাসী রিতা বলে ডাকে। বাবার সঙ্গে তিনবার গ্রামে এসেছেন তিনি। সর্বশেষ এসেছেন আট বছর আগে। তখন তার বয়স ছিল ১২ বছর। মার্গারিটা সোনা জয়ের পর থেকে কাশিপুরবাসী আনন্দে ভাসছে।
মামুন গ্রামে একতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এসে সেই বাড়িতেই ওঠেন। মার্গারিটা বাংলাদেশের খাবার খেতে পারেন না। তাই তাকে সেদ্ধ চিংড়ি এবং মাংসই খাওয়ানো হতো।
মস্কোতে জন্ম নেওয়া ২০ বছর বয়সী মার্গারিটা গেমসের পঞ্চদশ দিনে বাংলাদেশ সময় শনিবার গভীর রাতে ব্যক্তিগত অল-অ্যারাউন্ড ইভেন্টে সোনা জেতেন।
মার্গারিটার বাবা মেরিন প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাশিয়াতেই থিতু হয়েছেন। মা সাবেক রিদমিক জিমন্যাস্ট আন্নার কাছ থেকেই দীক্ষা পেয়েছেন তিনি।
মার্গারিটা শেষবার যখন দেশে এসেছিলেন, তখন বেশিরভাগ সময় প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে মেতে থাকতেন। ঘরের পাশে একটি পুকুর আছে। পুকুরপাড়ে আনমনা হয়ে মাছ দেখতে ভালোবাসতেন।
জহুরা বলেন, ‘মামুন সবসময় তার মেয়েকে স্মরণ করিয়ে দিত এটাই বাড়ি। সময় পেলে যেন বাংলাদেশ দেশে চলে আসে।’
মামুন এসএসসি পাশ করেন দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। এইচএসসি করেন দিনাজপুর সরকারী কলেজ থেকে। এরপর ভর্তি হন রাজশাহী মেডিকেল কলেজে।
‘মর্গে লাশ দেখে ও ডাক্তারি পড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এরপর ভর্তি হয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ১৯৮৩ সালের শেষ দিকে বৃত্তি নিয়ে রাশিয়া চলে যায়। এরপর আন্নাকে বিয়ে করে। মামুনের একটি ছেলেও আছে। নাম ফিলিপ আল মামুন।’ বলেন জহুরা।
শনিবার রাতে কাশিপুরের অনেকে টিভির সামনে অপেক্ষায় ছিলেন। তাদের মেয়ে সোনা জিতবেন বলে। মার্গারিটা জন্মভূমির এই রাতজাগা মানুষকে হতাশ করেননি। পদক হাতে নিয়ে ভুলে যাননি এই দেশটার নাম। সোজাসুজি বলে দেন, ‘এই পদক বাংলাদেশেরও।’
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস