অস্ট্রেলিয়ায় বহু ভাষা-ভাষীদের অংশগ্রহণে যথাযথ মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যে পালিত হয়েছে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দেশটির রাজধানী ক্যানবেরায় প্রভাতফেরিসহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের এসব আয়োজনে ক্যানবেরার মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত-কূটনৈতিকসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন।
আজ সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি)পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এবারও ক্যানবেরার তেলোপিয়া পার্কে মানুকা সার্কিট ও নিউ সাউথ ওয়েলস স্ট্রিটের ক্রসরোডে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
প্রভাতফেরি সকাল ৬টা ২০ মিনিটে শুরু হয়ে মানুকা ওভাল ঘুরে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শেষ হয়।
এতে অংশগ্রহণ করেন এসিটি গভর্ণমেন্টের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাসেল স্টিফেন স্মিথ, অ্যাটর্নি জেনারেল ও এসিটি গ্রিন দলের নেতা শেন রাতেনবারি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, অষ্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, সার্ক রাষ্ট্রসমূহের বিভিন্ন ভাষা-ভাষীদের প্রতিনিধি, অষ্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী ও অভিবাসীগণ, অস্ট্রেলিয়া সফরররত বাংলাদেশের এক প্রতিনিধি দলের সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ।
এতে অংশগ্রহণকারীরা অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় ভাষা শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান, ভারতের হাইকমিশনার মনপ্রীত ভোরা, এসিটি গভর্ণমেন্টের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাসেল স্টিফেন স্মিথ, অ্যাটর্নি জেনারেল ও এসিটি গ্রিন দলের নেতা শেন রাতেনবারি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন।
এ সময় সুফিউর রহমান বলেন, বিশ্বের ৭৯০ কোটি মানুষ প্রায় ৭ হাজার ভাষায় কথা বলেন। যার প্রায় অর্ধেকই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মাতৃভাষা সংরক্ষণে দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বহুভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের গুরুত্ব গভীরভাবে অনুভব করে। বক্তারা মহান শহীদ দিবস ও আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য্য তুলে ধরেন। ভারতের রাষ্ট্রদূতসহ বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অর্জনে এবং ভাষার সম্মান রক্ষায় বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তারা বর্তমান বিশ্বের অস্থিরতা মোকাবিলার জন্য বহু সংস্কৃতিবাদ ও ভাষার অন্তর্ভুক্তির ওপর জোর দেন।
একুশের ব্যাপারে সম্যক অবহিত করা এবং নৃ-তাত্ত্বিক ভাষাসহ সকল মাতৃভাষার সম্মান তাদের মানসে বিস্তারের লক্ষ্যে গত বছরের ন্যায় এবারও এই অস্থায়ী শহীদ মিনার চারদিন ব্যাপী খোলা রাখা হয়েছে।
এদিন স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হাইকমিশনার সুফিউর রহমান জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন এবং দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। নিজ নিজ ধর্মমত ও প্রথা মোতাবেক ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্যে মৌন প্রার্থনা এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসটির প্রথম প্রহরের অনুষ্ঠান শেষ হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি