বাংলা৭১নিউজ, মাহবুব রহমান সুমন,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আবাসিক কোয়াটার গুলো সংস্কারের অভাবে বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে দীর্ঘদিন থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এতে একদিকে যেমন সরকারের লাখ লাখ টাকা ধ্বংস হচ্ছে,অন্যদিকে পরিত্যক্ত এ কোয়াটার গুলো এখন স্থানীয় দুস্কৃতিকারীদের অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়ায় পরিনত হয়েছে।
রাতের বেলা এসব পরিত্যক্ত কোয়াটারে চলছে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজ। তাছাড়া আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা(এফ,ডব্লিউ,ভি) ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার(স্যাকমো)কে দুরবর্তী স্থান থেকে কর্মস্থলে আসতে হচ্ছে। ফলে অফিসিয়াল কাজকর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টির পাশাপাশি কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনসাধারণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনে অবস্থিত। বাকি ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আবাসিক কোয়াটার গুলো অযতœ আর অবহেলায় বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে দীর্ঘদিন থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
তদারকি না থাকায় এগুলোর দরজা জানালার কপাট চৌকাঠ গ্রীল চুরি হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও দেয়ালের ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা। বসবাস না থাকায় দেয়ালে, মেঝেতে ও ছাদে আগাছা জন্মে ঝোঁপ ঝাঁড় সৃষ্টি হয়েছে। শুধুমাত্র কাশিপুর ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আবাসিক কোয়াটারটিতে কোন রকমে বসবাস করছেন একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৭৭-৭৮ইং অর্থবছরে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অফিস ভবন ও বসবাসের জন্য আবাসিক ভবন নির্মান করা হয়। প্রতিটি আবাসিক ভবনে কর্মরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের বসবাসের জন্য দুই কক্ষ বিশিষ্ট আলাদা ফ্লাট তৈরী করা হয়। তৎকালিন সময়ে প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ব্যয় হয় প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা।
নির্মানের পর কয়েক বছর সংশ্লিষ্টরা এগুলোতে বসবাস করেন। কিন্তু সংস্কারের অভাবে ধীরে ধীরে কোয়াটার গুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় বাসা ছাড়তে বাধ্য হন তারা। ফলে প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এ মুল্যবান সরকারী ভবন গুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জানান, কোয়াটারে না থাকলেও প্রতিমাসে প্রত্যেক কর্মচারীর বেতন থেকে বাসা ভাড়া ও সংস্কার বাবদ পাঁচশ টাকা করে কর্তন করা হয়। কিন্তু কোয়াটার সংস্কার হয়না। বাসা ভাড়া দিয়েও কর্মস্থলে থাকতে না পারায় যাতায়ত বাবদ আমাদের প্রচুর টাকা ব্যয় হয়। তাই কোয়াটার গুলো সংস্কার হলে আমরা অনেকটা সুবিধা পেতাম।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সয়ফুল ইসলাম বলেন, কোয়াটার গুলো সংস্কারের আবেদন করে প্রতি মাসে উপর মহলে রির্পোট করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও কোন ফল পাওয়া যায়নি।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস