বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা চার মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার মামলাগুলোর প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন পুলিশ তা দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম মো. গোলাম নবী প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্র জানায়, এর আগে চালতি বছরের ১০ এপ্রিল উপাচার্যের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এসএম কামরুল আহসান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া একই সময় অপর তিনটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। তবে কোনো মামলার এজাহারেই আসামির নাম উল্লেখ নেই। অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতিটি মামলাই রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা হয়েছে।
চলতি বছরের ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টা থেকে ২টার মধ্য শতাধিক মুখোশধারীরা উপাচার্যের বাড়িতে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, পাইপ, হেমার, লাঠি ইত্যাতি নিয়ে উপাচার্যের বাড়ির ওয়াল টপকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। দুষ্কৃতকারীরা ঐতিহ্যবাহী ভবনে সংরক্ষিত মূল্যবান জিনিসপত্র, আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ, ফ্যানসহ সকল মালামাল ভাঙচুর করে। ভবনে রক্ষিত দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ভবনে রক্ষিত সিটি ক্যামেরা ভাঙচুর করে ও আলামত নষ্টের জন্য কম্পিউটারে রক্ষিত ডিভিআর পুড়িয়ে দেয়। এতে কমপক্ষে দেড়কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
এ ঘটনায় পরদিন মামলাটি দায়ের করা হয়। ৯ এপ্রিল ভোর ৪টার দিকে দোয়েল চত্বর এলাকায় অন্দোলনকারীরা রাস্তা বন্ধ করে টায়ার ও আসবাবপত্র জালিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রাখে। এ সময় পুলিশ এগিয়ে গেলে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। এ সময় পুলিশ তা প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ওই ঘটনায় শাহবাগ থানার এসআই রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে পরদিন মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে ওই দিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজের অপরাধে শাহবাগ থানার এসআই ভজন বিশ্বাস বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া ওই একই সময় সিটিএসবির পুলিশ পরিদর্শক মো. হুমায়ূন কবির ও কনষ্টেবল মো. আবু হেনা মোস্তফাকে ৩০ থেকে ৪০ জন ছাত্র লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে। গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হন ওই দুজন। এ ঘটনায় আহত পুলিশ পরিদর্শক মো. হুমায়ূন কবির বাদী হয়ে পরদিন অপর আরেকটি মামলাটি দায়ের করেন।
ফারুককে পরীক্ষার দেয়ার অনুমতি: এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেনকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কারাকর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. গোলাম নবী এ আদেশ দেন। শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ফারুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র। তার প্রথম বর্ষের সেমিন্টার পরীক্ষা আগামী ২৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কারাবিধি অনুসারে তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হোক।
এর আগে চলতি মাসের ১৫ জুলাই ফারুকের জামিন নাকচ করেন আদালত। এরও আগে গত ৩ জুলাই ফারুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুরের মামলায় ফারুক কারাগারে রয়েছেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস