চলতি মৌসুমে হজ প্যাকেজের খরচ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। এর মধ্যেই আগামীতে হজের খরচ আরও বাড়বে বলে প্রচারণা চালাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
রোববার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও সৌদি আরবের হারাম শরীফের নিকটবর্তী বিভিন্ন হোটেল ভেঙে ফেলায় এ বছর হোটেল ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এবং অধিক পরিমাণ অর্থ দিয়ে হোটেল ভাড়া করা হচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় বিভিন্ন কারণে এ বছর হজ প্যাকেজকে হ্রাসকৃত প্যাকেজ হিসেবে ধরা যায়।
একই ধারাবাহিকতায় বলা যায় যে, আগামী বছরগুলোয় হজ প্যাকেজের মূল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। কারণ, ভেঙে ফেলা বাড়ি/হোটেলসমূহ আবার গড়ে তুলতে ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগবে। এ পরিস্থিতিতে চলতি বছরের ঘোষিত হজ প্যাকেজই সর্বনিম্ন হিসেবে বিবেচনা করা যায়। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হজযাত্রীদের এ বছরই হজ প্যাকেজে নিবন্ধিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
হজ এজেন্সিগুলো বলছে, চলতি বছর হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ করতে না পেরে এমন অভিনব কৌশলে নেমেছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়। কারণ সাত দফা সময় বাড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় মন্ত্রণালয় এখন খরচ বাড়ার ভয় দেখাচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালনের অনুমতি পেয়েছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জনের কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এবার হজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই প্রাক-নিবন্ধন করেও শেষ পর্যন্ত হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করছেন না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সাত দফা সময় বাড়িয়ে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারিতে নিবন্ধনের বাকি রয়েছে ৮ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে হজের খরচ ১১ হাজার ২৭৫ টাকা কমিয়ে তিন দফা সময় বাড়ানোর পরও ১০ হাজার হজযাত্রীর নিবন্ধন করাতে পারেনি। শেষ সময় নির্ধারিত কোটা পূরণ হবে কি তা নিয়ে সংশয়ে কর্মকর্তারা।
হজ এজেন্সিগুলো বলছে, সৌদি সরকার থেকে পাওয়া নির্ধারিত কোটার হজযাত্রী পাঠাতে না পারলে আগামীতে এ সংখ্যক কোটা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হবে। তাই কোটা পূরণ করতে আগামীতে খরচ বাড়বে এসব অপকৌশল চালানো হচ্ছে।
বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের উপ-সচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী দুই তিন বছরের মধ্যে বাসা ভাড়া কমার কোনো সুযোগ নেই। বরং বাড়তে পারে। বৈশ্বিক যে পরিস্থিতি আগামীতে বিমান ভাড়া কমবে সেটিও বলা যাবে না। এ পরিস্থিতিতে আগামীতে হজের খরচ কমবে না বরং বাড়বে।
এটা নিবন্ধন বাড়ানোর কৌশল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কৌশল নয়, সম্মানিত হজযাত্রীদের বিষয়টি অবহিত করতেই এ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ