বাংলা৭১নিউজ,খুলনা প্রতিনিধি: খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ৬৩৭ কোটি ৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি এ বাজেট ঘোষণা করেন। এটি তার পাঁচ বছর মেয়াদের সর্বশেষ বাজেট।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বসবেন নগর ভবনে।
বাজেট ঘোষণাকালে বিদায়ী মেয়র মনিরুজ্জামান মনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৪৪০ কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। পরে তা সংশোধিত আকারে দাড়ায় ২৬৯ কোটি ৯১ কোটি ৯৪ হাজার টাকায়। বাস্তবায়ন হয়েছে শতকরা ৬১ দশমিক ২৩ ভাগ।
তিনি বলেন, এ বাজেটে নতুন কোনো কর আরোপ করা হয়নি। বকেয়া পৌরকর আদায়, নবনির্মিত সকল স্থাপনার ওপর প্রচলিত নিয়মে কর ধার্য্য এবং নিজস্ব আয়ের উৎস সম্প্রসারণের মাধ্যমে করপোরেশনের আয় বাড়োনোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
এবারের ঘোষিত বাজেটকে একটি উন্নয়নমুখী বাজেট উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাজেটে নগরীর সড়ক ও ড্রেনেজ তথা জলাবদ্ধতা নিরসন ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ বাজেটে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নসহ ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে মশা নিধন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
তাছাড়া এ বাজেটে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তা মোকাবেলা, তার অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার দিক নির্দেশনা এ বাজেটে আছে।
মেয়র বলেন, বাজেটের রাজস্ব তহবিল থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৮১ কোটি ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রারম্ভিক স্থিতি ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা এবং রাজস্ব খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৩৪ কোটি ২২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। বাকি ৪৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকার মধ্যে উন্নয়ন তহবিলের সরকারি অনুদান (২য় অংশ) থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭১ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং বিশেষ প্রকল্প (৩য় অংশ) অনুদান প্রাপ্তি খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৮৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
ব্যয়ের খাতে রাজস্ব তহবিল থেকে সংস্থাপন ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে সংস্থাপন ব্যয় ১০৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ অর্থাৎ নগরীর বিভিন্ন রাস্তা, ড্রেন ও অবকাঠামোগত সুবিধাধীন উন্নয়ন ব্যয় ৬৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, মূলধন হিসাব ৩০ লাখ টাকা এবং সমাপনী স্থিতি ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এছাড়া সরকারি অনুদান (২য় অংশ) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সরকারি অনুদান ৪৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বিশেষ থোক ২৫ কোটি ও জাতীয় এডিপিভুক্ত/প্রস্তাবিত প্রকল্পে সরকারি অনুদান ২০০ কোটি টাকা। বিশেষ প্রকল্প ন্যাশনাল আরবান প্রোপার্টি রিডাকশন প্রোগাম, বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড প্রকল্প, নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প পার্ট-২, নিরাপদ পথ খাবার, আরবান পাবলিক এন্ড এনভারমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, সিটি ওয়ার্ড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন এনগেজমেন্ট ইন খুলনা, আরবান ম্যানেজমেন্ট অব ইন্টারনাল মাইগ্রেশন ডিউ টু ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ ইন খুলনা সিটি কর্পোরেশন, রিজিওনাল ইনক্লুসিভ আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, সোলার স্ট্রীট লাইট প্রকল্প ও খালিশপুর কলেজিয়েট স্কুল নির্মাণ, এনগেজিং মাল্টি সেক্টরাল পাটনার্স ফর ক্রিয়েটিং অপরচুনিটিজ ইমপ্রভিং ওয়েলবিয়িং এন্ড রিলিজিং এন্ড রিলিজিং রাইটস অব দি আরবান পুত্তর প্রজেক্ট ও লোকাল গভর্ণেন্স ফর চিলড্রেন প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৩ কোটি টাকা।
তবে এবার জলাবদ্ধতা নিরসন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নে ৮৪৩ কোটি এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত সড়ক মেরামত ও উন্নয়নে ৬০৮ কোটি টাকার দুটি প্রকল্পের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
গত ১৫ মে অনুষ্ঠিত কেসিসি নির্বাচনে বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। নির্বাচনে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক বিএনপির প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন।
বাংলা৭১নিউজ/জেড এইচ