বিভিন্ন কারণে দেশে কৃষি জমির পরিমান কমলেও ধানের উৎপাদন বেড়েছে। বিগত পনের বছরের এক পরিসংখ্যান থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। পরিসংখ্যানে পনের বছরের তথ্য-উপাত্ত তুলে দেখানো হয়, কৃষি জমির পরিমান কমলেও ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর তথ্য থেকে আরও জানা যায়, তাদের উদ্ভাবিত ১১৩ জাতের ধানের মধ্যে ৬৩টিই উদ্ভাবন করা হয়েছে গত দেড় দশকে। এছাড়া নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
দেশে কৃষি জমির পরিমান কমার কারণ হিসাবে বলা হয়- নগরায়ন, শিল্পায়ন, ইটভাটা, আবাসন তৈরি কিংবা পুকুর কেটে মৎস্য চাষ ইত্যাদি কারণে ধীরে ধীরে কমছে কৃষি জমি। সর্বশেষ কৃষি শুমারি অনুযায়ী বছরে দেশে আবাদি জমি কমছে শূন্য দশমিক দুই-শূন্য শতাংশ হারে।
তবে চাষযোগ্য জমি কমলেও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ধানের উৎপাদন। একের পর এক পরিবেশ ও আবহাওয়া সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করে চমক দেখাচ্ছেন দেশের বিজ্ঞানীরা। এ উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-বিনা ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত উদ্ভাবন করেছে ১৯টি জাত।
এসব উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনে নিবিরতা বেড়েছে ধান চাষে। আউশ, আমন ও বোরো মৌসুমে বিপুল পরিমাণ ধান উঠছে কৃষকের গোলায়। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ দখল করেছে বিশ্বের তৃতীয় স্থান।
এদিকে, ধানের জীবনকাল কমিয়ে আনাসহ আরও কিছু বিষয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এরমধ্যে রয়েছে লবণাক্ততা সহনশীল, জলমগ্নতা ও জলাবদ্ধতা সহনশীল, খরা সহনশীল এবং জোয়ার-ভাটা সহনশীল জাতের উন্নয়ন।
আদি জাতের ধান থেকে শুধু শর্করার চাহিদা পুরণ হতো। অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ছিল খুবই কম। তবে নতুন উদ্ভাবিত জাতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন, জিংকসহ নানা ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান।
আবাদি জমি কমার পাশাপাশি ক্রমেই বাড়ছে চালের চাহিদা। তাই বর্ধিত চাহিদা পূরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে আরও উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনে ব্যাপক গবেষণা চলছে বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ