বাংলা৭১নিউজ, মোঃ মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়ায় টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলের পানিতে আত্রাই-বারনাই ও নাগর নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগাম কৃত্রিম বন্যায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমির বোরো ধান সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো প্রায় ১৫০ হেক্টর জমির ধান। তাছাড়া আড়াই হাজার হেক্টর জমির ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। নিচু এলাকায় চাষ করা অধিকাংশ ধান পানিতে ডুবে গেছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা। ফলে চলনবিলের চৌগ্রাম, তাজপুর, ইটালি, ডাহিয়া ও রামানন্দখাজুরা ইউনিয়নের অনেক বিলে কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানির নিচে।
উপজেলা কৃষি অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সিংড়া উপজেলায় এবার ৩৮ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সিংড়া উপজেলার আত্রাই-বারনই ও নাগর নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার চৌগ্রাম,তাজপুর,ইটালি-ডাহিয়া ও রামানন্দখাজুরা ইউনিয়নের কয়েকটি বিলে পানি ঢুকে প্রায় ১৫ হেক্টর জমির বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো প্রায় ১৫০ হেক্টর জমির ধান। তাছাড়া আড়াই হাজার হেক্টর জমির ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। নিচু এলাকায় চাষ করা অধিকাংশ ধান পানিতে ডুবে গেছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা। ফলে চলনবিলের চৌগ্রাম,তাজপুর,ইটালি,ডাহিয়া ও রামান্দখাজুরা ইউনিয়নের অনেক বিলে কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানির নিচে।
উপজেলার ভোগা গ্রামের কৃষক শাহ আলম জানান, তার ১৪ বিঘা জমির বোরো ধানের মধ্যে ৮-১০বিঘা জমির ধান পানির নিচে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না তিনি। উপজেলার উত্তর দমদমা গ্রামের কৃষক শমসের আলী জানান, ২৫বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলাম। গত কয়েক দিন হঠাৎ টানা বর্ষণ ও ঢলের পানিতে ফসল ডুবে গেছে। শ্রমিকদের অধিক টাকা দিয়ে ধান কেটে নিতে হচ্ছে। তারপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, চলনবিল অঞ্চলের অনেক কৃষকের স্বপ্ন এখন পানির নিচে। শেরকোল ইউপির ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ক্িবর হোসেন জানান, শেরকোল ইউনিয়নের চাইলাকুড়া, তেলিগ্রাম ও কুমড়ার বিল সহ লইলার বিলের কৃষকরা এখন ধান কাটা শুরুই করতে পারেননি। আগাম বন্যা ও ভারী বর্ষণে অধিকাংশ জমির ধান তলিয়ে গেছে। ফসল নষ্ট হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকদের খাবার সংকট সহ গরুর খাবার নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা জানান, চলনবিলের সারদানগর বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও বাতাসে উপজেলার ১৫ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমির ধান। তাছাড়া প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। নিচু এলাকায় চাষ করা অধিকাংশ ধান পানিতে ডুবে গেছে। চলনবিল অঞ্চলের প্রায় ৬৫ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মওসুমে জেলায় মোট ৬১হাজার ২শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয় এবং এ থেকে এবার প্রায় ৪লক্ষ ৩৮হাজার মেট্রিকটন ধানের ফলন আশা করা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস