আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিসব উপলক্ষ্যে সরকারি তিন দিনের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রেকর্ড অসংখ্য পর্যটক সমাগম হয়েছে প্রাকৃতি সৌন্দর্য্যরে ভান্ডার পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পর্যটকের আগম ঘটে বেলাভূমিতে। শীতের শেষ মুহূর্তে ফাগুনের প্রারম্ভে বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন শ্রেণির হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে কুয়াকাটার সকল স্পট। বেচা-বিক্রিও বেড়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। হোটেল-মোটেলের সকল সিট বুকিং হয়ে আছে এক সপ্তাহ আগ থেকেই।
সরেজমিন দেখা গেছে, কুয়াকাটার ঝাউবন, লেম্পুর বন, গঙ্গামতি, কাউয়াচর এবং মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার ও জাতীয় উদ্যানের গাছ-গাছালির ছায়ায় পর্যটকদের পদচারণায় মুখোরিত হয়ে উঠেছে। এ সময় খুলনা থেকে সপরিবারে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. শাকুর হাসান বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শীতও চলে যাচ্ছে। ফালগুনের শুরুর এই আবহাওয়ায় নৈস্বর্গীক কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসার সুযোগ হাত ছাড়া করিনি। কেননা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ছুটি পাওয়ায় ছুটে এসেছি কুয়াকাটায়। এখানকার প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্য আমাদের প্রতিটি মানুষকে মুগ্ধ করে।
কুয়াকাটার শুটকি মার্কেট, ঝিনুক মার্কেট, রাখাইন মার্কেটসহ সকল বাণিজ্যিক এলাকা পর্যটকদের আগমন লক্ষ্যণীয়। বেচা-বিক্রি বেড়েছে তিনগুণ। কেনাকাটা করতে আসা পর্যটক মো. আলাউদ্দিন বলেন, কুয়াকাটায় বেড়াতে এসেছি এমন খবরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের জন্য পছন্দের আসবাবপত্র, শোপিচ এবং তাঁত কাপড় ক্রয় করার জন্য বলেছে। সে কারণেই এই মার্কেটে আসা। দামও হাতের নাগালে।
ব্যবসায়ী মো. সোহরাব হোসেন বলেন, প্রতি বৃহস্পতি ও শুক্রবার পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পায়। তবে এখন ভাষাদিবস উপলক্ষ্যে পর্যটকের আগমণ ঘটেছে লক্ষাধিক। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে বেচা-বিক্রি। কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের ছবি তোলায় নিয়োজিত ব্যবসায়ী মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের এখন আর পর্যটকদের বলতে হয় না যে, ছবি তুলবেন? এখন পর্যটকরাই নিজেরা বলে আমাদের ছবি তুলে দেন। এখন আমাদের আহারের সময়ও পাই না। খুব ব্যস্ত সময় পার করছি। এই প্রথম কুয়াকাটায় এতো বেশি পর্যটকের আগমন হয়েছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ওহিদুজ্জামান সোহেল বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে পর্যটকদের ব্যাপক আগমন হয়েছে কুয়াকাটাতে। ইতিমধ্যে কুয়াকাটার সকল আবাসিক হোটেল মোটেল এবং রিসোর্টগুলোতে পর্যটদের আগমনে পরিপূর্ণ কোথাও সিট খালি নাই। এ বছর কুয়াকাটায় সর্বোচ্চ পর্যটকদের আগমনের রেকর্ড হয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসপি মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, কুয়াকাটায় অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটেছে। সে কারণে ২৪ ঘণ্টা পর্যটকদের সেবা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এজন্য জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তিন স্তরের পুলিশ মোতায়ন রয়েছে কুয়াকাটা সর্বত্রই।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে