বাংলা৭১নিউজ,(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে। শনিবার দুপুরে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩৮ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকায় জেলার ২৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫শ হেক্টর জমির আউশ, পাট, ভুট্টা, কাউন, চিনা ও শাকসবজির ক্ষেত। এছাড়া নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার।
সরজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। করোনার কারণে এমনিতেই কাজকর্ম নেই, তার উপর বন্যার আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বানভাসিরা।
গ্রামের আবুল হোসেন ও মোজাম্মেল হক জানান, চরের আবাদ সব নষ্ট হয়ে গেছে। বাড়ির চারপাশে যারা সবজি লাগিয়েছেন সেগুলো এখন পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও নিচু ল্যাট্রিন ডুবে যাওয়ায় বিপদে পড়েছে নারী ও শিশুরা।
এদিকে নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া, থেতরাই, বুড়াবুড়ি ও বেগমগঞ্জ এলাকার মানুষ। ভাঙছে রৌমারীর কর্ত্তিমারী, চিলমারীর নয়ারহাট, কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ও সারডোব এলাকা। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে প্রায় ২ শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে গেছে।
ব্রহ্মপুত্রের চরমশাল চরের বাসিন্দা মুসা মিয়া ও ভগবতির চরের জাহাঙ্গীর আলম জানান, চরের অধিকাংশ ঘর-বাড়িতে পানি উঠেছে। অনেকেই উঁচু ভিটায় থাকলেও নিচু ভিটার বাসিন্দারা নৌকা ও চৌকির উপর আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান তারা।
এসব বিষয়ে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ভাঙন কবলিতদের সরিয়ে আনতে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও শুক্রবার ভাঙন কবলিত উপজেলাগুলোতে ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে