বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও অস্থির কুষ্টিয়ার চালের বাজার। হু হু করে বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম। গত এক মাসেরও কম সময়ে কুষ্টিয়ায় চালের দাম পাঁচ দফায় কেজিপ্রতি চার টাকা বেড়েছে। দু-একদিন পরপরই চালের দাম বাড়ছে।
সরেজমিন কুষ্টিয়া শহরের পৌর বাজার ও বড় বাজার ঘুরে চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের এক-দুদিন আগে থেকেই কুষ্টিয়ায় চালের দাম বৃদ্ধি শুরু হয়। ঈদের পর দাম আরও বেড়েছে।
সর্বশেষ সোমবার (২৩ মে) কুষ্টিয়ার বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি এক টাকা বেড়েছে। এ নিয়ে গত এক মাসেরও কম সময়ে কুষ্টিয়ার বাজারে পাঁচ দফায় চালের দাম বাড়লো।
বর্তমানে কুষ্টিয়ার চালের বাজারে অটো রাইচ মিলে ভাঙানো মিনিকেট চাল ৬৪ টাকা কেজি, সাধারণ মিনিকেট ৬৩ টাকা, অটো রাইচ মিলে ভাঙানো কাজললতা ৫৬ টাকা, অটো রাইচ মিলে ভাঙানো বাসমতি ৭৬ টাকা, সাধারণ বাসমতি ৭৫ টাকা, অটো রাইচ মিলে ভাঙানো কাটারীভোগ ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৭৮ টাকা ও অটো রাইচ মিলে ভাঙানো পাইজাম ৪৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে গত ১৯ মে অটো রাইচ মিলে ভাঙানো মিনিকেট চাল ছিল ৬৩ টাকা, সাধারণ মিনিকেট ৬০ টাকা, অটো রাইচ মিলের কাজললতা ৫৬, কাজললতা সাধারণ ৫২, অটো রাইচ মিলের বাসমতি ৭৫ টাকা, বাসমতি সাধারণ ৭২ টাকা, কাটারীভোগ অটো রাইচ মিল ৭২, নাজিরশাইল ৭৮ ও পাইজাম ৪৬ টাকা।
কুষ্টিয়া পৌর বাজারের চাল ব্যবসায়ী মা স্টোরের মালিক কিরণ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চালের ব্যবসা করছি। কিন্তু বোরো ধানের ভরা মৌসুমে চালের দাম এ রকম দফায় দফায় বৃদ্ধি পেতে কখনও দেখা যায়নি।’
তিনি জানান, গত কয়েকদিন আগে কুষ্টিয়ার খাজানগর মিল গেটে মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা যেখানে তারা ২৮০০ টাকায় কিনেছেন, এখন সেই মিনিকেট ৩১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তার মতে, ঘূর্ণিঝড় আশানির প্রভাবে ধানের বাজার চড়া থাকায় চালের দাম দফায় দফায় বাড়ছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর মিল গেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিল গেটেও চালের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে খাজানগর মিল গেটে মিনিকেট চাল ৫০ কেজি ৩০৫০ টাকা থেকে ৩১০০ টাকা, কাজললতা চাল ২৭০০ টাকা এবং আঠাশ চাল ২৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ধানের দামও। বর্তমানে কুষ্টিয়ার বাজারে সরু ধান প্রতি মণ ১৪০০ টাকা, বোরো ধান ৯৬০ টাকা, বাসমতি ১৫০০ টাকা ও কাজললতা ১২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচও মৌসুমের শুরুতে বোরো ধান ছিল ৮৬০ টাকা মণ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের বাজার কমার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান যে দাম রয়েছে সেই দাম আরও বৃদ্ধি পেলেও বলার কিছু থাকবে না। দফায় দফায় চালের দাম বাড়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাদের।
এবার জেলার ছয়টি উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ধানের উচ্চফলন হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৩৫ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে।
উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৭৮ মেট্রিক টন। এ বছর ফলন বেশ ভালো হওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ