বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: ভারতের তৈরি প্রথম পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ (নিউক্লিয়ার সাবমেরিন) আইএনএস অরিহন্ত ভারতীয় নৌসেনায় কমিশনড হয়েছে ২০১৬ সালের অগস্টে। নিয়ম মাফিক তার আগেই এক বার লম্বা সি ট্রায়াল (সমুদ্রে যাতায়াত এবং অস্ত্র প্রয়োগ) সেরে নিয়েছিল আইএনএস অরিহন্ত।
ভারতের তৈরি প্রথম পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ এটি। দীর্ঘ মহড়ায় সমুদ্রের তলা থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে করে প্রতিপক্ষের উপরে পরমাণু হামলা চালানোর মহড়া অত্যন্ত সফল ভাবে সম্পন্ন করেছে নিউক্লিয়ার সাবমেরিনটি। এই সাফল্যে উল্লসিত নৌসেনা। উল্লসিত ভারতের প্রধানমন্ত্রীও।
আইএনএস অরিহন্তের এই সফল ডেটারেন্স পেট্রোল ভারতের সামরিক বাহিনীর মর্যাদাকে অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। ভারতের ‘পরমাণু ত্রিশূল’ আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্পূর্ণ হল বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানানো হচ্ছে।
পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজগুলোর ইঞ্জিনের শব্দ অত্যন্ত কম। ফলে সমুদ্রের তলা দিয়ে খুব নীরবে হানা দিতে পারে এগুলি। প্রতিপক্ষের রাডারকে ফাঁকি দিতেও এই সাবমেরিনগুলি দক্ষ। তাই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রতিপক্ষের ভূখণ্ডের কাছাকাছি গিয়ে কোথায় ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করে এই সব ডুবোজাহাজ, তা বোঝা খুব কঠিন।
আইএনএস অরিহন্ত থেকে আপাতত দু’রকমের পরমাণু অস্ত্রবাহী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যাবে। ‘সাগরিকা’ এবং ‘কে-৪’। সাগরিকা ৭৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। আর কে-৪ ৩৫০০ কিলোমিটার উড়ে গিয়ে পরমাণু হামলা চালাতে পারে এটি। ফলে চিন বা পাকিস্তানের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ শহরকেই নিশানা করা যাবে।
নিউক্লিয়ার সাবমেরিন ভারতের হাতে নতুন এল, এমন নয়। রাশিয়ার কাছ থেকে আগেই আকুলা ক্লাস নিউক্লিয়ার সাবমেরিন লিজ নিয়েছিল ভারত। আইএনএস চক্র নামে সেই পরমাণু শক্তিচালিত রুশ ডুবোজাহাজেই ভারতীয় নৌসেনার প্রশিক্ষণ হয়। একই সঙ্গে চলছিল আইএনএস চক্রের চেয়েও পারদর্শী নিউক্লিয়ার সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত তৈরির কাজ।
২০০৯ সালে অরিহন্তকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জলে নামানো হয়েছিল। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে ২০১৪ সালে সাবমেরিনটির সি ট্রায়াল শুরু হয়। ২০১৬ সালে সাবমেরিনটি নৌসেনায় কমিশনড হয়। ২০১৮-র ৫ নভেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, অরিহন্তের প্রথম ডেটারেন্স পেট্রোল মহড়া সফল।
বাংলা৭১নিউজ/এস এইস