বাংলা৭১নিউজ,(খুলনা)প্রতিনিধি: খুলনায় ইভটিজিং কিংবা মহল্লাভিত্তিক বখাটেপনা নয়, কিশোররা গ্রুপ তৈরি করে পরিকল্পিত হত্যায় অংশ নিচ্ছে। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই অনেকে জড়িয়ে পড়ছে অপরাধী চক্রের সঙ্গে। ঘটাচ্ছে ভয়ঙ্কর সব অপরাধ। গত মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার খুলনায় পৃথক দুটি হত্যাকাণ্ডের পর ফের আলোচনা উঠে এসেছে কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনদুপুরে এ দুটি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় কিশোররা। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতসহ কিশোর অপরাধীদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে পুলিশ ও র্যাব।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বেলা পৌনে ৪টার দিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা মজিদ সরণি এলাকায় সুজুকি মোটরসাইকেল শো-রুমের সামনে মহিদুল ইসলাম (২৭) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় মো. সাগর (১৯) ও আশিক (১৯) নামের দুই আসামিকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে বুধবার মহানগর হাকিম আতিকুস সামাদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ওই দুই তরুণ।তারা বলেন, গল্লামারী লিনিয়র পার্কে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সুমন ও মাসুমকে চর থাপ্পর মেরেছিল মহিদুল ইসলাম। সেই মারপিটের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে মো. সাগর ও আশিককে নিয়ে হামলা চালায় সুমন ও মাসুম। হত্যার উদ্দেশ্য না থাকলেও ছুরিকাঘাতে খুন হয় মহিদুল।
এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনার রূপসা বাগমারা এলাকায় গুপ্তির (দুই দিকে ধারালো ছুরি) আঘাতে সারজিল ইসলাম সংগ্রাম (২৬) নামের এক যুবক নিহত হন। তিনি ওই এলাকার মুজিবুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে সংগ্রামের একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের লিডার রাহাতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয়। এই জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
শুধু এ হত্যাকাণ্ড দুটিই না। গত কয়েক মাসে খুলনায় ধর্ষণ, খুন, ব্লাকমেইলিং ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের কয়েকটি ঘটনায় কিশোর অপরাধীদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিকল্পনার অভাবে কিশোর গ্যাং বেড়ে উঠছে। কিছু ব্যক্তি (গডফাদার) তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কিশোরদের ব্যবহার করছে। ফলে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা। এজন্য এসব গ্যাং বেড়ে ওঠার আগেই তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে কিশোর অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, খুলনা মহানগরীতে যাতে কিশোর গ্যাং গড়ে উঠতে না পারে এ জন্য মহানগর পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক উঠান বৈঠক করে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। আর যে কোনো ঘটনা ঘটলে আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএইচ