কিডনিতে পাথর হওয়া এখন সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোনো বয়সী নারী-পুরুষের এই সমস্যা হতে পারে। বিশ্বের সব দেশেই কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। নানা কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। তবে এর সংখ্যা কত হতে পারে জানেন কি? শত থেকে হাজার পর্যন্ত।
তবে ভারতের মহারাষ্ট্রের ধরনাজ ওয়াডিলের কিডনি থেকে ১ লাখ ৭২ হাজার ১৫৫টি পাথর বেরিয়েছিল। যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর ঘটনাটি ঘটে। ধরনাজ ওয়াডিলের বাম কিডনিতে ছিল সেই পাথরগুলো।
সাধারণত শরীরে ক্যালসিয়াম, ফসফেট, ইউরিক এসিড প্রভৃতির সমন্বয়ে কিডনির পাথর তৈরি হয়। দৈনন্দিন খাবারে এসব উপাদান থাকে, যা কিডনির মাধ্যমে পুরোপুরি বিপাক হয় না। এ ছাড়া বেশি পরিমাণ ইউরিক এসিড জমা হয়ে অনেক ক্ষেত্রে মেটাবলিক অ্যাবনরমালিটিজের কারণে সিস্টিন এবং অক্সালেট রক্তে জমা হয়।
একসময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃস্টালগুলো ক্রমান্বয়ে পাথর তৈরিতে ভূমিকা রাখে। যাদের পানি খাওয়ার প্রবণতা একটু কম, তাদের এসব পদার্থের ক্রিস্টিলাইজেশন হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
একাধিক গবেষণা বলছে, নারীদের তুলনায় পুরুষের কিডনিতে পাথর হওয়ার হার বেশি। ৪০ বছরের পর থেকে পুরুষের পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, যা ৭০ বছর পর্যন্ত বাড়তে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে ৫০ বছর বয়স থেকে বাড়তে থাকে। তবে যে কোনো সময়ে যে কারও কিডনি বা মূত্রনালিতে বা ইউরেটারেও পাথর হতে পারে। যাদের একবার পাথর হয়েছে তাদের বারবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৪৫ বছর বয়সী ছিলেন তখন ধরনাজ ওয়াডিল। পেশায় একজন পান বিক্রেতা। ছয়মাস ধরে তলপেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হচ্ছিল। কয়েকবার চিকিতসকের শরণাপন্ন হন। প্রথমে স্বাভাবিক ভেবে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। কোনো উন্নতি না হওয়ায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসক কিডনিতে পাথর সনাক্ত করেন।
ধরনাজের অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসক। তবে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে বিস্মিত হয়ে যান উপস্থিত চিকিৎসকরা। কিডনির ভেতরে অসংখ্য পাথর। তার সাইজও বেশ বড়। গুনে দেখা গেল সেই পাথরের সংখ্যা ১ লাখ ৭২ হাজার ১৫৫টি। সেই অস্ত্রোপচারের সময় লেগেছিল ৩ ঘণ্টা। শুধু চিকিৎসকরাই নন এই ঘটনায় অবাক বনে যায় পুরো বিশ্ব। গিনেস কর্তৃপক্ষ তা তালিকাভুক্ত করে বিশ্বরেকর্ডে।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস
বাংলা৭১নিউজ/এবি