সাম্প্রতিক সময়ে দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে ‘কিছু মেঘ জমে ছায়া তৈরি করেছে’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দুদেশের সম্পর্ককে ‘খুবই দৃঢ়’ এবং ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি সেই ‘কালো মেঘ’ মুছে ফেলতে ভারতের সাহায্য চেয়েছেন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির বৈঠকে তিনি এসব কথা জানান।
বৈঠকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি এখন ভারতে অবস্থান করছেন, তার প্রসঙ্গও উঠে আসে। বিগত ১৫ বছরের নির্মম ও দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসনের বর্ণনা করে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের লোকজন উদ্বিগ্ন। কারণ তিনি সেখান (ভারত) থেকে অনেক বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের কাজ হলো তরুণদের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখা। এটি একটি নতুন বাংলাদেশ। এসময় অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে সেসবের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি।
ড. ইউনূস বন্যা এবং পানি ব্যবস্থাপনায় ঘনিষ্ট দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে ভারতকে তার উদ্যোগে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা আমাদের সবার জন্য একটি সমৃদ্ধ নতুন ভবিষ্যত গড়তে চাই।
সংখ্যালঘু ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, আমরা একটি পরিবার। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এসময় নয়াদিল্লি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে এবং দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার সম্পর্ক জোরদারে ‘সম্মিলিত ও সমন্বিত প্রচেষ্টা’য় আগ্রহী বলে জানান ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।
তিনি বলেন, সম্পর্ক বাড়ানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনো চিন্তা নেই। আমরা এটিকে উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হিসেবে দেখি। আমরা যেখানে ছিলাম সেখান থেকেই আবার শুরু করতে চাই।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রায় প্রতি ঘণ্টায় বাংলাদেশের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করেছেন বলেও জানান ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে এটি ভুল ধারণা। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট দলের জন্য নয়, বরং সবার জন্য।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ