বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: মঙ্গলবার পুলওয়ামার প্রত্যাঘাতের পর থেকেই অশান্তি অব্যাহত। বুধবার ভোর ৪.২০ মিনিট থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের সোপিয়ানের মেমানদার এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষীদের গুলির লড়াই শুরু হয়। সোপিয়ানে সন্ত্রাসবাদী লুকিয়ে রয়েছে এমন খবর পেয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ এবং স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ।
মেমানদারের একটি বাড়িতে ৩ সন্ত্রাসবাদীকে আটক করা সম্ভব হয়। এরা জইশ জঙ্গি গোষ্ঠীর। তল্লাসি চালানোর সময় সন্ত্রাসবাদীরা নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পালটা গুলি ছুঁড়ে তাদের প্রতিহত করে বাহিনী। এরপর এনকাউন্টারে ২ জইশ জঙ্গি খতম হয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা পর এই গুলির লড়াই শেষ হয় বলে সেনা সূত্রে জানা গেছে৷
নিয়ন্ত্রণরেখা ঘেঁসা সোপিয়ানে জঙ্গিরা লুকিয়ে থাকতে পারে বলে সেনাবাহিনী জানতে পারে। খবর পেয়েই সেখানে অভিযানে নামে ভারতীয় সেনা, সিআরপিএফ ও স্পেশাল অপরেশন গ্রুপের (এসওজি) বাহিনী৷ অভিযানের অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের দিকে ধেয়ে আসে গুলি৷ পালটা গুলি ছোঁড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরাও৷
সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, সোপিয়ানের মেমান্দার এলাকায় স্থানীয়দের বাড়ি থেকে এই হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা৷ স্থানীয়দের বাড়িগুলিকেই ঢাল হিসাবে ব্যাবহার করা হচ্ছে৷ ফলে সতর্কতার সঙ্গে পালটা পদক্ষেপ করতে হচ্ছে সেনাকেও৷ ইতিমধ্যেই সোপিয়ানের ইন্টারনেট পরিসেবা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে৷ সর্বশেষ এনকাউন্টারে ২ জইশ জঙ্গি খতম হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার ভোররাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রায় ৮০ কিমি ভেতরে ঢুকে এয়ার স্ট্রাইক করে ভারতীয় বিমান বাহিনী৷ বালাকোট অঞ্চলে যুদ্ধ বিমান থেকে ফেলা হয় গোলা৷ সেই অভিযানেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি৷ নিহত হয় জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের পাঁচ নিকট সহচর সহ প্রায় ৩০০ জঙ্গি৷
এরপরই ভারতীয় বিমান সেনাদের সাফল্যের খবর ছড়িয়ে পড়ে দুনিয়াজুড়ে৷ বিভিন্ন দেশ ভারতকে সমর্থন জানায়৷ পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রবল আলোড়ন হয় ভারতের এই প্রত্যাঘাতকে ঘিরে৷ দিশেহারা ইসলামাবাদও ভারতের বিরুদ্ধে পালটা আঘাত হানার বার্তা দেয় সেদেশের সেনাকে৷
এরপরই মঙ্গলবার রাতে রাজৌরি, পুঞ্চ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপার থেকে বোমা, গুলি ছোঁড়া শুরু হয়৷ কড়া জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও৷ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাক সেনার পাঁচটি ক্যাম্প৷ এই অভিযানে ভারতীয় পাঁচ জওয়ান আহত হয়৷ তাদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে হাসপাতালের চিকিৎসকরা৷
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী মনে করছে এয়ার স্টাইকে মুখ পুড়েছে পাকিস্তানের৷ ফলে প্রত্যাঘাতের লক্ষ্যে জঙ্গিদের সামনে রেখেই ছায়া যুদ্ধে নেছে পাক বাহিনী৷ বুধবার ভোররাতে জঙ্গিদের হামলা তারই ইঙ্গিত বলে অনুমান৷
জঙ্গিদের ধরতে সোপিয়ান সহ উপকত্যকাজুরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। লুকিয়া থাকা তিন জঙ্গিদের খোঁজে চলে চিরুনি তল্লাশি৷ ভারতের এয়ার স্ট্রাইকের পর প্রত্যাঘাতের লক্ষ্যে এই ধরণের হামলা আপাতত জারি রাখবে পাকিস্তান৷ সামনে জঙ্গিদের রেখে পেছন থেকে পাক বাহিনীর লড়াই৷ তবে কড়া জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীর যোদ্ধারা৷
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:কোলকাতা২৪x৭অনলইন,জি২৪