বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশ-ভারত দু’ দিনের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভা কাল থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে। অনুষ্ঠেয় সভায় যোগদানের জন্য ভারতের বাণিজ্য সচিব মিজ রীতা তিওতিয়া এর নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদল ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন। ১৬ (ষোল) সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব শুভাশীষ বসু।
বাংলাদেশ ও ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি, কলা ও কৃষ্টি একই সূত্রে গাঁথা। ভারত বাংলাদেশের কেবল প্রতিবেশী রাষ্ট্রই নয় বরং অকৃত্রিম ও পরিক্ষিত বন্ধু। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের অবদান বাংলাদেশ সবসময় কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ-ভারত সর্বপ্রথম দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই চুক্তির ধারাবাহিকতাতেই ২০১৫ সালে বাণিজ্য চুক্তিটি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে প্রয়োজন অনুসারে আরও যুগোপযোগী করে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি ছাড়াও বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় দেশই বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক চুক্তি ও জোটের সদস্য, যেমন: SAARC-এর আওতায় গঠিত SAPTA ও SAFTA, APTA, BIMSTEC, BBIN এবং BCIM।
ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ১০ শতাংশই এককভাবে ভারতের সঙ্গে হয়ে থাকে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ-ভারত মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানির পরিমাণ ছিল ৬.১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭২.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য ভারসাম্য ব্যাপকভাবে ভারতের অনুকূলে হলেও ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আনতে ভারত ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে ২৫টি পণ্য (মাদক, তামাক, মদ ইত্যাদি জাতীয় পণ্য) ব্যতীত সকল পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা, শুল্ক ও অশুল্ক বাঁধা দূর করে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অধিকতর স্বচ্ছ, সুদৃঢ়, সহজ এবং নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভা এক বছর পরপর নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সর্বশেষ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভারতের নয়া দিল্লীতে ১৫-১৬ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে।
অনুষ্ঠেয় এই বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভায় পূর্বে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে এবং নিম্নলিখিত উল্লেখযোগ্য বিষয়সমূহের উপর আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে:
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অবস্থিত স্থল শুল্ক বন্দরসমূহের অবকাঠামো উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি;
দুই দিনের বৈঠক শেষে ভারতের প্রতিনিধিদল ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ঢাকা ত্যাগ করবেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস