মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে তিস্তা নদীতে মাছ ধরলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাছের উৎপাদন বাড়াতে অবৈধ জাল বন্ধে শুধু জেলা প্রশাসনকে কাজ করলে হবে না, যৌথভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে। তাহলে আমাদের মৎস সম্পদ বাড়বে। আর মৎস সম্পদ বাড়লে দেশের মানুষের মাছের চাহিদা পূরণ হবে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কচুয়া বাজারে কেএন প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থানীয় মৎস্যজীবী ও প্রান্তিক খামারিদের গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে মাছের অভয়ারণ্য বাড়াতে হবে। দেশীয় মাছ খাদ্য তালিকায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় সে লক্ষ্যে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিনিয়ত কাজ করছে। মৎস্যজীবীদের সাময়িকভাবে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হয়। এই সময় সরকার তাদের সহায়তা প্রদান করে।
এ সময় তিনি তামাক চাষের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে বলেন, তামাক শুধু মানুষের শরীরেরই ক্ষতি করে না, তামাক চাষ পরিবেশের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। অথচ যে তামাক গরুও খায় না, সে তামাক মানুষ খায়। তিস্তাপাড়ে বিষাক্ত তামাক চাষ বন্ধ করে ভুট্টাসহ বিকল্প চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, রংপুর বললেই প্রথম আমার মনে পড়ে আবু সাঈদের কথা। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তারা নতুন বাংলাদেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা চার দেয়ালের ভেতরে নানা রকম মিটিং করলেও আজকে তিস্তা নদীপাড়ে মুক্ত পরিবেশে সাধারণ খামারিদের সাথে সরাসরি উন্মুক্ত আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করেছে। উত্তরবঙ্গের তিস্তা নদীর পাড়ে এলে আমার মঈশাল ভাইদের কথা মনে পড়ে। উত্তরবঙ্গে মহিষ পালনে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্নার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তিস্তা নদীরক্ষা কমিটির সভাপতি ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর রংপুরের পরিচালক ড. মো. নজরুল ইসলাম, মৎস্য অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক মো. সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া প্রমুখ।
এ সময় নোহালী ও আলমবিদিতর ইউনিয়নে দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানান খামারি শাহিনুর ইসলাম। মৎসজীবী ফরিদুল ইসলাম বলেন, শুষ্ক মৌসুমে মৎস প্রকল্পে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির ব্যবস্থা করা যায়। প্রত্যেক বছর যেন খামারিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়, এ দাবি তুলে ধরেন মুরগি খামারি রাবেয়া বেগম। গণসমাবেশে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার সাঈদ রেজা।
খামারিদের বিভিন্ন সমস্যা ও প্রস্তাবনার প্রতি উত্তরে এলডিডিপি প্রকল্পের পরিচালক জসীম উদ্দীন বলেন, এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় ৪০ হাজার খামারিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খামারিদের উন্নতজাতের গরু পালনে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। এছাড়াও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় রংপুরে ৯টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মিল্ক ফিডিং কার্যক্রম চালু রয়েছে যার একটি গঙ্গাচড়ায়।
গণসমাবেশে মৎস্যজীবী ও প্রান্তিক খামারিরা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এ সময় জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে