বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: তামিলনাড়ুতে আজ শুক্রবার থেকে সকাল-সন্ধ্যা বন্ধ শুরু হয়েছে। কয়েকটি কৃষক ও ব্যবসায়ী সংগঠন এই বন্ধ এর ডাক দিয়েছে। তামিলনাড়ুতে কাবেরী নদীর পানি বন্টন নিয়ে বিরোধের জের ধরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এ বন্ধ হচ্ছে।
আর বৃহস্পতিবার এক যুবক কাবেরী নদীর পানি ভাগাভাগির বিরোধকে কেন্দ্র করে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
ডিএমকেসহ বিরোধী দলগুলো এই আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছে। খবর বার্তা সংস্থা পিটিআই’র।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজ্যজুড়ে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জনজীবনে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা, শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে না। সড়ক ও রেলপথে অবাধে যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে।
এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে স্থানীয় বেশ কিছু মুদি দোকানও বন্ধ রয়েছে। রাজ্যের পরিবহন কর্পোরেশন পরিচালিত বাসগুলোর পাশাপাশি ট্রেনগুলোও স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছে। তবে ট্যাক্সি, অটোরিক্সা ও মালবাহী নৌযানগুলো চলাচল করছে না।
কর্নাটকে তামিলদের লক্ষ্য করে সহিংস হামলার প্রতিবাদে এই বন্ধের ডাক দেয়া হয়েছে। এছাড়া আন্দোলনকারীরা কাবেরী নদীর পানির হিস্যার দাবি জানিয়েছে।
আন্দোলনটিকে কেন্দ্র করে তামিলনাড়ুতে সশস্ত্র রিজার্ভ ফোর্সসহ কয়েক হাজার পুলিশ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। চেন্নাইয়ে ১৫ হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কর্নাটকে তামিলদের উপরে হামলার প্রতিবাদে তামিলনাড়ুতে এই বন্ধের ডাক দিয়েছে সেখানকার কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলি।
গতকাল চেন্নাইয়ের কোয়ামবেদু বাজারের অল হোলসেল ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক জানান, হাজার হাজার সব্জি বিক্রেতা বন্ধে অংশগ্রহণ করবেন।
তামিলনাড়ু মিল্ক এজেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতিও বলেছেন, ‘‘প্রায় ৭৫ লাখ খুচরো দুধ বিক্রেতা এবং দেড় লক্ষ এজেন্ট বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। ফলে দুধ সরবরাহ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মার খাবে।’’ তবে শিশু, প্রবীণ নাগরিক এবং অসুস্থদের কথা ভেবে বিক্রেতা এবং এজেন্টরা সকাল ন’টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বন্ধে অংশ নেবেন।
বন্ধ কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছে ডিএমকে, এমডিএমকে, পিএমকে সিপিআইএম, সিপিআই এবং কংগ্রেসের মতো দলগুলি। তামিলদের রক্ষার আবেদন জানিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টেও আবেদন জমা পড়েছে।
আবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতাকে চিঠি লিখে সেখানে বসবাসকারী কন্নড়দের জীবন এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।
কাবেরী অশান্তির জের গড়িয়েছে পুদুচেরিতেও। কর্নাটকে তামিলদের উপর হামলার প্রতিবাদে বন্ধের ডাক দিয়েছে বেশ কিছু তামিল সংগঠন। বন্ধকে সমর্থন করেছে বিজেপি।
কাবেরী আন্দোলনের জেরে হিংসায় রাশ টানতে ব্যর্থ হওয়ায় ফের কর্নাটক এবং তামিলনাড়ু সরকারের তীব্র সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট।
গতকাল দেশটির শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কাবেরী নিয়ে তাদের রায় মেনে চলতেই হবে। সাধারণ মানুষ যাতে আইন হাতে না তুলে নেয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আগেও হিংসা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস