শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ ক্রীড়া পরিষদে অস্থায়ী অফিস ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যেখানে চলবে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা চাচাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিসিএস ক্যাডার! হাইকোর্টের নতুন রেজিস্ট্রার হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী লামায় অগ্নিসংযোগ: ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে উপদেষ্টা-প্রশাসন নসরুল হামিদের ৩৬ কোটি টাকার সম্পদ, অস্বাভাবিক লেনদেন ৩১৮১ কোটি তিন উপদেষ্টাকে বিপ্লবী হতে বললেন সারজিস আলম জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম ফায়ার ফাইটার নিহতের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা কোরিয়া থেকে ৬৯৩ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার সাভারে বন্ধ টিএমআর কারখানা চালুর নির্দেশনা উপদেষ্টার দুদকের সাবেক কমিশনার জহুরুল হকের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু কনস্টাসকে ধাক্কা দেওয়ায় কোহলিকে আইসিসির শাস্তি শেখ হাসিনা-শেখ রেহানার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার দাবি ফখরুলের ১১ বছর পর দেশে ফিরছেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক যারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত

কাঁকড়া ধরা বন্ধ, অভাব ও ঋণের জালে বন্দী কর্মহীন জেলেরা

সাতক্ষীরা থেকে এবিএম মোস্তাফিজুর রহমান
  • আপলোড সময় বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১
  • ১৯০ বার পড়া হয়েছে

সামছুর ঢালী। বয়স পঞ্চাশ। শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনি গ্রামের মৃত কেনা ঢালীর ছেলে। পূর্বপুরুষের পেশা কাঁকড়া ধরা। নিজেও একই পেশা বেছে নিয়েছেন জীবিকার প্রয়োজনে। তার মতই দাতিনাখালি গ্রামের শাহ আলম সানার ছেলে মাহাবুবর সানা , একই গ্রামের উজির গাজীর ছেলে বারেক গাজীর পেশাও কাঁকড়া ধরা। কিন্ত কাঁকড়া ধরা বন্ধ থাকায় এদের মত হাজার হাজার জেলের সংসারে অভাব হানা দিয়েছে। জড়িয়ে পড়েছেন ঋণের জালে। মহাজনের কিম্বা এনজিওগুলোর কাছ থেকে এই ঋল তারা নিচ্ছেন চড়া সুদে। এদের সবারই বক্তব্য কাঁকড়া ধরার পাস বন্ধ থাকায় সংসারের চাকা আর ঘুরছে না। অন্য কোন উপায় না থাকায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে সময়মত কিস্তির টাকা দিতে না পারায়, ঋণ আদায়কারির গালিগালাজ শুনতে হয়, না পেরে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সংসার ফেলে পালানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

জানা গেছে, দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি না থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জেলে সম্প্রদায়। সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার উপর নির্ভরশীল এখানকার প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি জেলে পরিবার। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে সুন্দরবন উপকুল সংলগ্ন জেলেরা অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে না পেরে তারা তাদের পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছে।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরার জন্য পাঁচটি স্টেশন থেকে প্রতি বছর দু’হাজার নয়শত পাস (বিএলসি) বা অনুমতিপত্র ইস্যু করা হয়। এর মধ্যে কাঁকড়া ধরার জন্য এক হাজার সাতশত পাস দেওয়া হয়। প্রতিটি পাসের জন্য সরকারিভাবে ৩৫০ টাকা জমা দিতে হয়।

কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হিসেবে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরা বন্ধে প্রতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই দু’মাস পাস দেয়া বন্ধ থাকে। বছরের বাকি ১০ মাসই কাঁকড়া ধরার অনুমতি বা পাস দেয়া হয়ে থাকে। একইভাবে জুন ও জুলাই মাস মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় সুন্দরবনে মাছ ধরা বন্ধে পাস বন্ধ থাকে। বছরের বাকী ১০ মাসই মাছ ধরার অনুমতি বা পাস দেয়া হয়ে থাকে।

সম্প্রতি বন মন্ত্রণালয় থেকে খুলনা বিভাগীয় বনসংরক্ষক ও সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষককে দেয়া এক চিঠিতে গত বছরের ২০ মে থেকে আগষ্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদ-নদীতে কাঁকড়া ধরা বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছিল। চলতি বছরে ১ মার্চ থেকে আগষ্ট মাস পর্যন্ত কোন পাস দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়।

সরেজমিনে, শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের দাতিনাখালি গ্রামের শাহ আলম সানার ছেলে মাহাবুবর সানা (৫৮) বাংলা৭১নিউজ-কে বলেন, বাবার হাত ধরে সুন্দরবনে যাওয়া। মাছ ও কাঁকড়া ধরে তাদের জীবন জীবিকা চলে। বিগত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুন্দরবনের নদ-নদীতে কাঁকড়া ধরে পাঁচ সদস্যের পবিার পরিজন নিয়ে ভালভাবে চলছিলেন। সম্প্রতি বনবিভাগ চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে পাস দেয়া বন্ধ করে দেয়ায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে ও অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। মাহাবুবর সানা আরো জানান, পেটের ক্ষুধা সহ্য করতে না পেরে অনেকে চুরি করে কাঁকড়া ধরতে বাধ্য হচ্ছে।

একই গ্রামের উজির গাজীর ছেলে বারেক গাজী (৫৫) বাংলা৭১নিউজ-কে জানান, পাঁচ সদস্যের পরিবার, ৪০ বছর আগে বাবার হাত ধরে সুন্দরবনে কাঁকড়া তুলতে যাওয়া। তার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি একাই ২২ বছর সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরে জীবন জীবিকা চালিয়ে আছছেন। তিনি মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র কিনে দিয়ে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে যান। সুন্দরবন থেকে ফিরে কাঁকড়া বিক্রি করে বিগত দিনে মহাজনের কাছ থেকে নেয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করে দেন। এভাবেই চলতো তাঁর পরিবার পরিজন। বিগত গত পাঁচ মাস যাবৎ সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি না থাকায় তিনি আর সংসার চালাতে পারছেন না। মহাজনেরা ঋণও দিচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ পেশা ছেড়ে শহরে রিক্সা চালাতে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই।

বুড়িগোয়ালিনি গ্রামের মৃত কেনা ঢালীর ছেলে সামছুর ঢালী (৫০)। বিগত ৩০ বছর ধরে সুন্দরবনের নদ-নদীতে কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। গত পাঁচ মাস কাঁকড়া ধরার পাস বন্ধ থাকায় সংসারের চাকা আর ঘুরছে না। অন্য কোন উপায় না থাকায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে সময়মত কিস্তির টাকা দিতে না পারায়, ঋণ আদায়কারির গালিগালাজ শুনতে হয়, না পেরে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সংসার ফেলে পালানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

মাহাবুবর রহমান, সামছুর ঢালী ও বারেক গাজীর মত বুড়িগোয়ালিনি গ্রামের আবু হাসান, গাবুরার চাঁদনীমুখা গ্রামের মহববত আলী, মুন্সিগঞ্জের তাপস মহালদার, হরিনগরের শাহিন রায়, কৈখালির সাহেব আলীসহ কয়েকজন জানান, গত পাঁচ মাস কাঁকড়া ধরার পাস বন্ধ থাকায় সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর পাশাপাশি ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। অসুস্থ হয়ে পড়লে টাকার অভাবে তাদের চিকিৎসা হচ্ছে না। বর্তমানে সুন্দরবনে বনদস্যু ও ডাকাতদলের উৎপাত না থাকার জন্য তিনি বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

চীন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের কাঁকড়া রপ্তানি শুরু হওয়ার সাথে সাথে কাঁকড়ার দাম বেড়ে যায়। এরফলে সুন্দরবন উপকুলীয় এলাকার বুড়িগোয়ালিনি, দাতিনাখালি, কলবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জসহ কয়েকটি স্থানে কাঁকড়ার হ্যাচারি গড়ে ওঠে। এসব হ্যাচারিতে মূলত নরম কাঁকড়া শক্ত করা হয়।

এক দিকে ঋণের বোঝা অন্যদিকে ঘরে খাবার না থাকায় সুন্দরবনের জেলেরা পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা। সেই সাথে বিপাকে পড়েছেন ছোট ছোট কাকড়া খামারীরাও। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রায় তিন শতাধিক আড়ৎদার।

কলবাড়ি বাজারের আড়ৎদার দাতিনাখালি গ্রামের মনিরুল তরফদার জানান, বিগত নয় বছর ধরে তিনি কাঁকড়ার ব্যবসা করে আসছেন। কাঁকড়া কেনা-বেচা করে যে আয় হতো তাতে ছয় সদেস্যর পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি ভালভাবে জীবনযাপন করে আসছিলেন। গত কয়েক মাস ধরে জেলেরা কাঁকড়া ধরতে না পারায় তার ব্যবসাও লাঠে উঠেছে। সংসার চলা তো দূরের কথা, থ্যালাসামিয়া রোগে আক্রান্ত সাত বছরের একমাত্র মেয়েকে তিন মাস পরপর রক্ত দিতে হয়। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে তাকে রক্ত দিলেও এখনো পর্যন্ত পরবর্তীতে রক্ত দিতে টাকা যোগাড় করতে পারেনি। টাকার অভাবে রক্ত যোগাড় করতে না পারায় মেয়ের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। একই অবস্থা এলাকার শতাধিক আড়ৎদার ও দু’শতাধিক ছোট বড় খামারি মালিকের। বুড়িগোয়ালিনির তরুণ হ্যাচারি মালিক কামাল হোসেন জানান, চার বছর ধরে হ্যাচারিতে কাঁকড়া চাষ করছেন। কাঁকড়া আহরণ ও বিপনন ব্যবস্থার সঙ্গে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে দু’লক্ষাধিক মানুষের ভাগ্য জড়িত। গত পাঁচ মাস কাঁকড়া ধরার পাস বন্ধ থাকায় তার হ্যাচারিতে পাঁচজন কর্মচারির কাজ নেই। একই অবস্থা অন্য হ্যাচারিগুলোতে। তিনি বলেন, তিন মাস পর পর কাঁকড়া মারা যায়। আবার নতুন কাঁকড়ার জন্ম হয়। তাছাড়া কাঁকড়া ধরলে পরিবেশ ও নদীর কোন ক্ষতি হয় না। তাই ঠুনকো অজুহাতে কাঁকড়া ধরার পাস বন্ধ করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনা করা উচিত।

বুড়িগোয়ালিনিতে “এ্যাকোয়া ম্যাক্স সী ফুড” কাঁকড়ার প্রসেসিং স্টোরের স্বাধিকারী কালিগঞ্জ উপজেলার কাশীবাটি গ্রামের প্রয়াত বিএনপি নেতা ওয়াজেদ আলী বিশ্বাসের ছেলে শাহিদুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সাড়ে পাঁচ বছর আগে চার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে স্ত্রী ভিয়েতনামের নাগরিক আইভি মালালাকে সঙ্গে নিয়ে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কাঁকড়া রপ্তানি শুরু করেন। তিনি শুরুতেই সাতক্ষীরার প্রথম সফট্ ক্রাব বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রক্রিয়াজাত করে পাঠাতেন। ব্যবসাও ভাল চলছিল। করোনাকালিন সময়ে কিছু সমস্যা হলেও প্রচুর অর্ডারও পেয়েছিলেন। কিন্তু সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার পাস না দেয়ায় তার প্রতিষ্ঠানটি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তিনি অনতিবিলম্বে কাঁকড়া ধরার পাস খুলে দেযার জন্য কতৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

এ ব্যাপারে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারি বনসংরক্ষক (এসিএফ) এম এ হাসান বলেন, বন বিভাগের গবেষণা এবং তথ্য-উপাত্ত অনুসারে জুন, জুলাই ও আগষ্ট এই তিন মাস সুন্দরবনে বিচরণকারী পশু-পাখি ও গাছ-গাছালির প্রজনন মৌসুম। বন্য প্রাণির অবাধ বিচরণ ও বংশ বিস্তারের স্বার্থে পর্যটন ও জনপ্রবেশ, বন নির্ভর পেশাজীবীদের প্রবেশ এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থগিত রাখা সম্ভব হলে ধীরে ধীরে সুন্দরবন তার পূর্বের রূপ ফিরে পেতে পারে। সে কারণে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ বনমন্ত্রণালয়কে উল্লেখিত সময়ে সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পত্র প্রেরণ করেন। বনবিভাগ সেই কারণে সুন্দরবনে বনজীবীদের পাশ ইস্যু বন্ধ করছেন বলে এ বন কর্মকর্তা জানান। তিনি আরও জানান, সেপ্টেম্বর মাসে বনজীবীদের পাস দেওয়া হবে।

তবে, বুড়িগোয়ালিনি স্টেশনের সহকারী বন কর্মকর্তা এস এম সুলতান আহমেদ বলেন, গত বছর মন্ত্রী পরিষদ থেকে চিঠি দিয়ে সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়াসহ সকল ধরনের পাশ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তারা পাস বন্ধ রেখেছেন। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, কাঁকড়া ধরার পাস বন্ধের বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি বলেন, বন বিভাগের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com