করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পার্বত্য খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্প। গত দুই দশকে গড়ে ওঠা পাহাড়ের পর্যটন খাতগুলো কঠিন সময় পার করছে। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা।
প্রতি বছর ঈদে আলুটিলা রহস্যময় সুড়ঙ্গ, রিছাং ঝর্না, জেলা পরিষদ পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র হাজারো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল। করোনা সংক্রমণের কারণে এবার ঈদে পর্যটকশূন্য খাগড়াছড়ি। পর্যটক না আসায় দিন দিন বাড়ছে এ খাতের আর্থিক ক্ষতি। লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগের পরও আয় শূন্য হোটেল রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা।
গেল বছর পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকার পর খুলে দেয়া হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে চলতি বছরের ১৪ মার্চ থেকে ফের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এরপর থেকে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্র।
সেখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত চার মাসেরও বেশি সময় ধরে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় হোটেল-মোটেল মালিকদের ক্ষতি শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পুঁজি হারিয়ে অনেকেই প্রায় নিঃস্ব। এই অবস্থা চলমান থাকলে বিপাকে পড়বে পর্যটন খাতসহ সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে খাগড়াছড়িতে পর্যটক না আসায় হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বেকার হয়ে পড়েছে শত শত শ্রমিক। পর্যটক না থাকায় বন্ধ রয়েছে খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে পর্যটকবাহী যান চলাচল। ফলে এ পেশার মানুষগুলোর দিন কাটছে কষ্টে।
খাগড়াছড়ির পর্যটন উদ্যোক্তা মো. ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘করোনাকালে হোটেল-মোটেল ব্যবসায় আয় না থাকলেও কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে। পর্যটক না থাকলেও রিসোর্টগুলোতে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কমেনি। ফলে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন।’
সাম্পারি রির্সোটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাপলা ত্রিপুরা বলেন, ‘গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবে পাঁচ মাস বন্ধ ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার আগেই আবারও করোনার থাবায় বন্ধ হয়ে যায়। গত প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে খাগড়াছড়ি ও সাজেকের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। করোনায় বিপর্যস্ত পর্যটন খাতের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা নিয়েও শঙ্কি ব্যবসায়ীরা
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ইউনিট ব্যবস্থাপক একেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খাগড়াছড়ি ও সাজেকে হোটেল-মোটেলের সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক। এসব হোটেল-মোটেল বন্ধ থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে অনেক ব্যয় হচ্ছে। সরকারি প্রণোদনা না পেলে মুখ থুবড়ে পড়বে পর্যটন খাত।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএম