করোনা প্রিয়জন থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে মানুষকে। কাছের জনকে হারানোর ভয়ে কুঁকড়ে থাকে সবাই। অজানা আতঙ্কের দীর্ঘ লড়াইয়ে ক্লান্ত আজ পৃথিবী। করোনার অসুখ থেকে সেরে উঠর পরও এর প্রভাব থেকে রেহাই পেতে সময় লাগছে বেশ কিছু দিন। কোভিড-১৯ এমন একটি ভয়ঙ্কর রোগ যা লক্ষ লক্ষ মানুষকে মৃত্যুর শীতল পরশ দিচ্ছে। কোটি কোটি মানুষ যারা লড়াই করে সুস্থ হচ্ছেন তাদেরও শরীরের নানা অঙ্গ দুর্বল করে দিচ্ছে কোভিড।
অসংখ্য করোনা রোগী সুস্থ হওয়ার পরও ক্লান্তি তাদের দেহে বাসা বেধে থেকে যাচ্ছে বহুদিন। স্বাভাবিক জীবন ফিরতে অনেকটা সময় লাগছে। শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি ফিরে পেতে করোনা পরবর্তী সময়টাতে হালকা ব্যায়াম করা উচিত। তাই শরীরচর্চাটা কেমন করবেন, কতোটা ব্যায়াম করবেন, কী ধরনের ব্যায়াম করবেন সেটা বুঝতে হলে প্রথমে নিজের শরীরকে জানতে ও বুঝতে হবে।
মানুষ ভেদে শারীরিক গঠন, শক্তি ও সামর্থ্য সমান নয়। যেহেতু রোগটা একেকজনকে একেক রকম ভাবে আক্রমণ করছে, তাই নিজের শরীরের সমস্যাগুলো নিজেকেই বুঝতে হবে। হয়তো আপনার আগের তুলনায় শারীরিক সমস্যা কিছুটা কমে গেছে। সুস্থবোধও করছেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, একদমই সেরে গেছেন। আরো কিছুদিন সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকতে হবে, সচেতন হতে হবে প্রতিটি পদক্ষেপে।
করোনার পর অল্পতে ক্লান্তি থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের পরামর্শে হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। কিন্তু ব্যায়াম করতে গিয়ে যদি মনে হয়, শরীরের উপর চাপ বেশি পড়ছে, তাহলে আরো কিছুদিন বিশ্রাম নিন। ঠিক কী কী ধরনের এক্সারসাইজ করলে উপকার পাওয়া যাবে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
হাঁটাহাঁটি: প্রথমদিকে বাড়ির খোলা স্থানে বা বারান্দায় কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে দেখে নিতে পারেন হাঁপিয়ে যাচ্ছেন কিনা। যদি মনে হয় হাঁটতে ভালো বোধ করছেন, তাহলে স্পট ওয়াকিং বা এক জায়াগায় হাঁটতে পারেন। তবে সেটা ১০-১২ মিনিটের বেশি নয়। একটানা না পারলে ২-৩ মিনিট পরপর বিরতি নিন, তারপর আবার হাঁটুন।
যোগ ব্যায়াম: শুধু শরীরই সুস্থ রাখে না, মনে প্রশান্তি আনতেও ভীষণ কার্যকরী যোগ ব্যায়াম। এই সময় কয়েকটা সহজ যোগাসন করতে পারেন। যেগুলো করতে শরীরে খুব বেশি চাপ পড়বে না। তাছাড়া প্রাণায়াম, কপালভাতি, ভ্রমরীর মতো কিছু নিঃশ্বাসের ব্যায়াম করুন। সব ভুলে কিছুক্ষণ বসে ধ্যান করতে পারেন। দেখবেন মন অনেক শান্ত হবে।
স্ট্রেচিং: করতে সহজ ও শরীরে চাপ পড়বে না এমন হালকা স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করতে পারেন। হাত, পা, হাটু, শরীরের উপর অংশ, শরীরের নীচের অংশ স্ট্রেচ হয়, এমন ধরনের সহজ ব্যায়াম করুন। হাত সামনের দিকে বা উপর দিকে তোলা-নামানোর ব্যায়মগুলো করতে পারেন। এতে বেশি ক্লান্তি লাগবে না।
সিটিং মার্চ: যদি হাঁটতে কষ্ট হয়, তাহলে একটি চেয়ারে বসে নিন। এরপর এক জায়গায় বসেই হাঁটার ভঙ্গিতে পা চালান। এটাকে বলে সিটিং মার্চ।
পায়ের পাতার ব্যায়াম: টিপ-টো এক্সারসাইজ বা পায়ের পাতার ব্যায়াম বসে বসেই করতে পারবেন। পায়ের পাতা টানটান করুন এবং গোল করে ঘোরান। প্রথম ডান ডিকে দিয়ে গোল করে, তারপর বাঁ দিক দিয়ে। এ সময় পায়ের আঙুল টানটান করুন। দাঁড়িয়ে পায়ের আঙলের উপর ভর দিয়ে উঁচুতে ওঠার চেষ্টা করুন। সিঁড়ির কয়েক ধাপ ওঠা-নামা করতে পারেন। সিঁড়ির ধাপে পা রেখে হাটু ভাঁজ করে পা স্ট্রেচ করার ব্যায়মগুলো করে দেখে নিতে পারেন শারীরিক অসুবিধাগুলো।
বাংলা৭১নিউজ/এমএআর