বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: বুধবার বিকালে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানায় যুক্তরাষ্ট্রে আগের ২৪ ঘন্টায় ৮৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিড-১৯ এ।করোনভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাওয়ার রেকর্ড এটিই। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে এনিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ৪,৬০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেলো।
করোনাভাইরাসে একদিনে কোনো দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল ২৭শে মার্চ ইতালিতে। এএফপি’র রিপোর্ট অনুযায়ী ঐদিন ইতালিতে ৯৬৯ জন মারা গিয়েছিল।বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষও যুক্তরাষ্ট্রে। জন্স হপকিন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী বুধবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৩৭২ জনের মধ্যে।
এই সপ্তাহে হোয়াইট হাউজের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের প্রকাশিত এক ধারণায় উঠে আসে যে প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে নেয়া পদক্ষেপ স্বত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার পর্যন্ত মানুষ মারা যেতে পারে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার গতিবিধিকে ইতালির সাথে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, প্রাদুর্ভাবের সাম্প্রতিকতম মডেল পর্যবেক্ষণ করলে যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ধারার সাথে সবচেয়ে বেশি সাদৃশ্য পাওয়া যায় ইতালির।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা নিউ ইয়র্ক। দেশটিতে মোট আক্রান্তের প্রায় অর্ধেক নিউ ইয়র্ক রাজ্যে।বর্তমানে নিউ অরলিয়েন্স ও ডেট্রয়েটের মত অঞ্চলে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস ঘেব্রেয়েসাস মন্তব্য করেছেন যে, কয়েকদিনের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মধ্যে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে এবং অন্তত ৪৬ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাস্ক পরার বিষয়ে তাদের পূর্বের নির্দেশনা পরিবর্তন করার বিষয়ে আলোচনা করবে।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরামর্শ দিচ্ছিল যে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি, আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেবাদানকারী ব্যক্তি বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি ছাড়া কারো মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই।তবে এখন সবাইকেই মাস্ক পরতে পরামর্শ দেয়ার কথা চিন্তা করছে তারা।করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ।
অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম।
এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ পড়ার কারণে কিছুদিনের মধ্যেই অনেক দেশেই স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সরঞ্জাম ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের ঘাটতি দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/তথ্যসূত্র: বিবিসি অনলাইন