কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চলে সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুসকোর দুইজন সদস্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকান অঞ্চলের সামরিক বাহিনীর আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছেন।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কঙ্গোর সেনাবাহিনী এবং শান্তিরক্ষী বাহিনী এম২৩ বিদ্রোহীদের গোমা শহরের দিকে অগ্রসর হওয়া থামানোর জন্য প্রচণ্ড লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমা প্রায় ২০ লাখ মানুষের আবাসস্থল এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ও নিরাপত্তা কেন্দ্র।
দক্ষিণ আফ্রিকার সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, এম২৩ বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে দুইদিনে তাদের নয়জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্য এবং সাতজন দক্ষিণ আফ্রিকার উন্নয়ন সম্প্রদায় (এসএডিসি) বাহিনীর সদস্য।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই সদস্যরা বিদ্রোহীদের গোমার দিকে অগ্রসর হওয়া ঠেকাতে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে গেছেন। তাদের প্রচেষ্টায় এম২৩ বিদ্রোহীরা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
মালাওয়ির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র এমমানুয়েল এমলেলেম্বা জানিয়েছেন, এম২৩ বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের তিন সেনা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, এই সাহসী সেনারা তাদের দায়িত্ব পালনকালে শহীদ হয়েছেন। পরিস্থিতি এখনো অস্থিতিশীল। বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
গোমার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হওয়ায় জাতিসংঘ তাদের অনাবশ্যক কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে খাদ্য বিতরণ, চিকিৎসা সহায়তা এবং সুরক্ষার মতো জরুরি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মীরা রয়ে গেছেন।
এম২৩ বিদ্রোহীরা কঙ্গোর সেনাবাহিনী থেকে প্রায় এক দশক আগে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ২০২২ সালে নতুন করে সক্রিয় হওয়ার পর থেকে তারা ডিআরসির পূর্বাঞ্চলে বড় একটি এলাকা দখল করে নিচ্ছে।
ডিআরসি এবং জাতিসংঘ প্রতিবেশী দেশ রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে এম২৩ বিদ্রোহীদের সহায়তার অভিযোগ তুলেছে। রুয়ান্ডা অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ডিআরসির দীর্ঘস্থায়ী এই সংঘাতে প্রায় ১০০ সশস্ত্র গোষ্ঠী জড়িত। এই অঞ্চলের খনিজ সম্পদকে কেন্দ্র করে দশকের পর দশক ধরে লড়াই চলছে। ১৯৯৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং প্রায় ৭০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সূত্র: আল-জাজিরা
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ