কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে আবারও সরাসরি যাত্রা শুরু করলো দেশের প্রথম সমুদ্রগামী জাহাজ এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস। কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দর সড়কের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে শনিবার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় যাত্রা শুরু করে দুপুর ১টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছায় জাহাজটি। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে বিরতীর পর বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজারের উদ্দেশে ফের রওয়ানা দেয় বিলাসবহুল এ জাহাজ।
এ নৌ-পথে জাহাজটি গত বছর ৩০ জানুয়ারি এক জমকালো আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে।
পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, কক্সবাজার থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের দাবি দীর্ঘদিনের। কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স (লি.) এর উদ্যোগ ও পরিচালনায় অবশেষে এই দাবি পূরণ হয়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমী বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প থেকে পিছিয়ে থাকলেও যুগান্তকারী কিছু উদ্যোগের কারণে পর্যটনের সম্ভাবনাগুলো ক্রমশ এখন ডানা মেলতে শুরু করেছে। সম্প্রতি এই শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেন উদ্যোক্তা প্রকৌশলী এম এ রশিদ। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন সমুদ্রভ্রমণে বিলাসবহুল জাহাজের যাত্রার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন এই গুণী উদ্যোক্তা।
আগামী ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ওয়াটার বাসটার্মিনাল থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এই কোম্পানির আরেক বিলাসবহুল ক্রুজশিপ ‘এমভি বেওয়ান’। এটাও চলতি পর্যটন মৌসুমে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিনে নিয়মিত চলাচল করবে। চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটেও সমুদ্রগামী বিলাসবহুল কোনো জাহাজের যাতায়াত এটাই প্রথম।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এম এ রশিদ জানান, এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেসকে নিজস্ব ডকইয়ার্ডে একটি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল জাহাজ হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রায় ৫৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১১ মিটার প্রস্থের এই নৌযানে মেইন প্রপালেশন ইঞ্জিন দু’টি। আমেরিকার বিখ্যাত কামিন্স ব্র্যান্ডের এই ইঞ্জিনের একেকটির ক্ষমতা প্রায় ৬০০ বিএইচপি। জাহাজটি ঘণ্টায় প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটতে পারে। ১৭টি ভিআইপি কেবিন সমৃদ্ধ নৌযানটিতে তিন ক্যাটাগরির প্রায় ৫০০ আসন রয়েছে। রয়েছে কনফারেন্স রুম, ডাইনিং স্পেস, সি ভিউ ব্যালকনিসহ আধুনিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। এরচেয়েও অত্যাধুনিক সুবিধা নিয়ে তৈরি কোম্পানির আরেক বিলাসবহুল ক্রুজশিপ এমভি বেওয়ান।
ট্যুরস অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সাবেক সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, পাহাড় সমুদ্র বরাবরই টানে পর্যটকদের। সাগরের বিশালতার কাছে গেলেই প্রকৃতি সকলকে আপন করে নেয়। তাই বিশ্বের বৃহত্তম সৈকতের শহর কক্সবাজারের গুরুত্ব অন্যতম।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে সাগরের বুকে ক্ষুদ্রাকৃতির নয়নাভিরাম প্রবাল দ্বীপ- সেন্টমার্টিন। বিশ্বের অন্যতম সুন্দর এ প্রবালদ্বীপের গুরুত্ব পর্যটকদের কাছে অসিম। কিন্তু কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করতে পর্যটকদের পাড়ি দিতে হয় টেকনাফের দীর্ঘ স্থলপথ। সম্প্রতি এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস সেই বোরিং জার্নিকে নীল সমুদ্রের নান্দনিক ভ্রমণে রূপ দিয়েছে। নিঃসন্দেহে যা এক বিরল সুযোগ ও সম্ভাবনার হাতছানি। ভ্রমণ ব্যায়সহ বিস্তারিত জানতে ০১৮৭০৭৩২৫৯৯ এবং ০১৮৭০৭৩২৫৯৪ মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছেন জাহাজ কর্তৃপক্ষ।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে