বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: নেতৃত্ব ও পদ-পদবির ঝামেলা শেষ হওয়ার পর এরশাদ ও রওশনকে এখন দলের মঞ্চে একসঙ্গে দেখা যায়। দুজনই বেশ ফুরফুরে। স্ত্রীর সঙ্গে এই সুসম্পর্ক যে রাজনীতির মাঠের `রোমান্টিক বয়’ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হৃদয় উতলা করবে সেটাই স্বাভাবিক।
কদিন আগে এরশাদ এক সমাবেশে স্ত্রী রওশনকে দেখিয়ে বলেছিলেন, তাকে আবার পাশে পেয়ে এরশাদের হৃদয় আনন্দে ভরপুর। সেটি যে এরশাদ মিথ্যা বলেননি, তার নিদর্শন আজ আবার দেখালেন তিনি।
অবশ্য রওশনও স্বামীর এই ‘ভালোবাসা’র প্রতিদান দিতে ভোলেননি। ফলে সভামঞ্চে তাদের এই রসায়ন এক রোমান্টিক নাট্যদৃশ্যের অবতারণা করে। সবার কাছ থেকে কুড়িয়ে নেয় বাহবাও।
ঘটনাটি আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকের। বনানীর দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা চলছিল সেখানে। সভায় দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বক্তব্য দিয়ে উঠে যাচ্ছিলেন। এ সময় স্ত্রীর হাত ধরে থামান এরশাদ। বলেন, “কোথায় যাচ্ছ…আমি তোমার জন্য একটি কবিতা লিখেছি। বসো, কবিতাটা শোনো।”
স্বামীর এমন উষ্ণ আবাহন পায়ে ঠেলে এমন পাষাণ হৃদয় কার! রওশনও পারেননি। তিনি আবার চেয়ারে বসেন। এরপর এরশাদ ‘প্রিয়তমাকে’ আবৃত্তি করে শোনান স্বরচিত কবিতা ‘আলোর মৌমাছি’।
কে এই আলোর মৌমাছি তা জানতে অবশ্য উপস্থিত নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের অপেক্ষা করতে হয়নি। এরশাদই জানিয়ে দিলেন রওশনই তার আলোর মৌমাছি।
দলে নেতৃত্ব নিয়ে এত দিন ধরে মনোমালিন্য কাটিয়ে স্বামীর কবিতা শোনে উদ্বেলিত হলেন রওশন। তিনিও এরশাদের উদ্দেশে একটি কবিতা আবৃত্তির ইচ্ছা পোষণ করেন। বললেন, “তিনি (এরশাদ) যেহেতু আমাকে কবিতা শুনিয়েছেন, আমিও তাকে একটি কবিতা শোনাব।” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতাটি এরশাদকে পড়ে শোনান রওশন।
এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা হাততালি দিয়ে আশি-ঊর্ধ্ব এরশাদ ও সত্তরোর্ধ্ব রওশনকে অভিনন্দন জানান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এমএস