বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ। পঞ্চাশ বছর আগে, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ‘পূর্ব বাংলার বাঁচার এ দাবি’ উত্থাপন করেছিলেন। আজকের দিনের, এ ছয় দফা দাবি সারা পূর্ব বাংলায় সূচনা করে তীব্র গণআন্দোলনের।
বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের অধিকার আদায়ের এই আন্দোলনই এক সময় রূপ নেয় বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রামে। যার ধারাবাহিকতায় পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় নতুন এক স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ– বাংলাদেশ।
পরিবর্তিত লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে, ১৯৪৭ সালে, তৈরি হয় পাকিস্তান নামে একটি রাষ্ট্র যার দুইটি অংশ– পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। লাহোর প্রস্তাবে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের কথা থাকলেও বছরের পর বছর ক্রমাগত বৈষম্যের শিকার হয় পূর্ব পাকিস্তান।
১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি, লাহোরে, পশ্চিম পাকিস্তানের সবগুলো বিরোধী দলের আহ্বানে ‘নিখিল পাকিস্তান জাতীয় কনফারেন্সে’ শেখ মুজিবুর রহমান উত্থাপন করেন ছয় দফা দাবি– যার মূল কথা ছিল, অবহেলিত পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসন।পশ্চিমা শাসকদের নানা ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও এই ছয় দফা দাবিতেই ১৯৬৬ সালে সারা পূর্ব বাংলায় তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। ছয় দফা দাবিতে আওয়ামী লীগের ডাকা ৭ জুনের হরতালে, পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সাতজন শ্রমিক। গ্রেপ্তার হয় হাজার হাজার মানুষ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুহ আলম লেনিন বলেন, মানুষের মধ্যে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটেছে এই ৬ দফা দাবির মাধ্যমে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৬ দফার মাধ্যমে বাঙালির ম্যাগনাকার্টা প্রাপ্তির একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়।’
স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে গর্জে ওঠে পূর্ব বাংলার জনগণ। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় শেখ মুজিবুর রহমানকে। এতে গণআন্দোলন আরো তীব্র হয়। ১৯৬৯ সালে যা রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে।
বাংলার মুক্তির পথপ্রদর্শক, স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, আন্দোলনের নেতাকে দেয়া হয় অমর উপাধি– ‘বঙ্গবন্ধু’। পশ্চিম পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় অপেক্ষারত জাতিকে তিনি দেখান স্বাধীনতার পথ–দেন সাতই মার্চের সে অমর ভাষণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটার অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘৭০ এর নির্বাচনের ফলাফল এবং এর পরেই মুক্তিযুদ্ধ। কাজেই ৬ দফা শেষ পর্যন্ত এক দফা হয়ে গেলো।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইস