ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠনের পর তিন ভাগে ভাগ করে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এর প্রথম ভাগ ছিল ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, যা করতে গিয়ে দেখা গেছে ইসলামী ব্যাংকের আমানত ও বিনিয়োগের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি।
এই ঘাটতি কমাতে এস আলম গ্রুপের শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা এবং নতুন শেয়ার ইস্যু করে আরও ১০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এসব কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে গভর্নর আহসান মনসুর বলেন, “ব্যাংকগুলোর যে ক্ষতি হয়েছে, তা এক দিনে কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়। বিশেষ করে ইসলামী ব্যাংকের যে ক্ষতি করা হয়েছে, তা অন্য ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর ১১টি ব্যাংকের সম্পদের আকারের সমান হবে।”
“ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুন:গঠনের পর থেকে কি ধরনের কার্যক্রম চলমান, উন্নয়ন করা হয়েছে সে বিষয়টি চেয়ারম্যান নিজেই জানাবেন। এরপর ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ব্যাংকের পর্ষদ পুন:গঠনের পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে জানান।
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমানত ও বিনিয়োগের যে ঘাটতি রয়েছে তা পূরন করার জন্য এস আলমের শেয়ার বিক্রি করা হবে এবং নতুন শেয়ার ইস্যু করা হবে। পাচার করা টাকা পুনরুদ্ধার কৌশলের অংশ হিসেবে এসব শেয়ার বিক্রি করা হবে।
এস আলমের শেয়ার বিক্রির জন্য আদালতে মামলা করা হবে। এরপর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যেই এসব শেয়ার বিক্রি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকটিতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে আইএফসি ও আল রাজি গ্রুপের মতো পুরনো বিদেশি শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। গিগগিরই আল রাজি গ্রুপের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে সৌদি আরব যাব। তাদেরকে আবার বিনিয়োগে আমন্ত্রণ জানাব।
এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, আগের বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ফিরে এলে ইসলামী ব্যাংকের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে। তাছাড়া দেশের যদি কোনো ভালো বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করতে চায় তাহলে তাদেরকেও উৎসাহিত করা হবে।
ইসলামী ব্যাংকে কি পরিমান অর্থ লুটপাট হয়েছে এমন প্রশ্নোত্তরে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, চারটি অডিট ফার্ম এসব ক্ষয় ক্ষতি নিরূপনে কাজ করছে। আগামী ডিসেম্বরে অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। তখন পুরো বিষয়টি জানা যাবে। তিনি বলেন, আমাদের আন্তর্জাতিক মানের অডিট ফার্ম ছাড়াও ডিসেম্বরে বিশ্বব্যাংকের আমাদের সঙ্গে কাজ করবে। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরনের সন্দেহ থাকবে না।
কবে নাগাদ গ্রাহকরা নির্দ্বিধায় টাকা তুলতে পারবে এমন প্রশ্নোত্তরে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, চলতি বছর যাচ্ছে ক্ষয় ক্ষতি নিরূপনের বছর। আগামী ২০২৫-২৬ সাল হবে ইসলামী ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। আগামী জানুয়ারির পর থেকে নির্দ্বিধায় গ্রাহকরা ব্যাংকে গিয়ে টাকা তুলতে পারবেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ