কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতের করা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাঁকে সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট।
আদালতে বলেছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণের বিষয়ে আরো সতর্ক থাকতে হবে। একইসঙ্গে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে জারি করা রুল শুনানি নিয়ে আজ বুধবার (২৫ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় গত ২৫ জানুয়ারি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাত। তিনি বলেন, ওই বিচারককে তিনি চিনতে পারেননি। তাই অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ভুল হবে না বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ১৬ জানুয়ারি ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচন চলাকালে ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তানভীর আরাফাত।
ঘটনার পরদিন এসপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ওই বিচারক নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন। এর অনুলিপি গত ১৯ জানুয়ারি আইন ও স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরেও পাঠানো হয়। এ ঘটনা ২০ জানুয়ারি বিচারপতি মামনুন রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আসার পর আদালত এক আদেশে ওই এসপিকে তলব করেন।
২৫ জানুয়ারি এসপিকে হাইকোর্টে সশরীরে হাজির হয়ে বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। ওই আদেশের পরই এসপি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেছেন।
আবেদনে বলা হয়, ‘বিচার বিভাগের জন্য আমার মনে সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই বিন্দুমাত্র অসম্মান দেখানোর কথা দূরে থাক, বরং বিচার বিভাগের দেওয়া কাজে নিয়োজিত হতে পারলে নিজেকে সম্মানিত বোধ করি। এ ঘটনায় আমি মনের গভীর থেকে অনুতপ্ত। আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
এছাড়া ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা স্থানীয় উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলী ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের কাছে ওই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করায় আদেশ দেন হাইকোর্ট।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলীকে তুলে নিয়ে তাঁকে থানায় আটকে রেখে তাঁর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ করা হয় পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় হাইকোর্ট গত ২১ জানুয়ারি এক আদেশে ওই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও তাঁর পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে আইজিপির প্রতি নির্দেশ দেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ