বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: এলএনজি (লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস) টার্মিনাল থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সঞ্চালনের জন্য পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পাইপলাইন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
এ জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রস্তাব পাওয়ার পর ইতোমধ্যে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য জুয়েনা আজিজ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) নিজস্ব জনবল ও ঠিকাদার দিয়ে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছে। কিন্তু এ প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
কেননা বলা হয়েছে, জিটিসিএলের নিজস্ব জনবল ও দেশিয় ঠিকাদারদের সর্বোচ্চ ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের উচ্চচাপ পাইপলাইন স্থাপনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন প্রশ্ন তুলেছে- প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ৪২ ইঞ্চি ব্যাস বিশিষ্ট পাইপলাইন নির্মাণ কিভাবে করবে জিটিসিএল। তাই জিটিসিএলের নিজস্ব জনবল ও দেশিয় ঠিকাদার দিয়ে কিভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব তা যৌক্তিকতাসহ পুর্নগঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) উল্লেখ করতে বলেছে কমিশন।
সূত্র জানায়, প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মহেশখালী এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে বিদেশ থেকে যে গ্যাস আমদানি করা হবে চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত গ্যাস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে। এজন্য জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে আনোয়ারা হতে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ১০০০ পিএসআইজি’র (গ্যাসের চাপের একক) ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের ৩০ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। চলতি বছর থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
গত ১৮ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনে পিইসি সভা সূত্রে জানা গেছে, সভায় পরিকল্পনা কমিশন বলেছে কোথায় থেকে কত সম্ভাব্য কত গ্যাস পাওয়া যেতে পাবে তা ডিপিপিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে গ্যাস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে।
তাই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে মিল রেখে ২০৩০ সাল নাগাদ কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ অঞ্চলে গ্যাসের চাহিদা কত হবে এ সংক্রান্ত একটি প্রক্ষেপণ তৈরি করে পুর্নগঠিত ডিপিপিতে সংযোজন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণে সরকার বিদেশ থেকে এলএনজি গ্যাস আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে মহেশখালীতে পেট্রোবাংলা এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস থেকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ এলাকার চাহিদা পূরণ করতে চায়।
এরপর উদ্বৃত্ত প্রায় ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করতে চায়। এ জন্য সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপনের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/আরএম