তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) খালাসে ব্যবহৃত মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে ভাসমান দুটি টার্মিনালের একটির মুরিং লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে এলএনজি থেকে দিনে প্রায় ১২ কোটি ১০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমেছে। এ কারণে আগামী দেড় মাস দেশে গ্যাসসংকটের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, এই ত্রুটি মেরামত করতে আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এদিকে মুরিং লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদেশ থেকে গ্যাস নিয়ে আসা জাহাজগুলো সামিটের টার্মিনালে নোঙর করতে পারছে না।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১৮ নভেম্বর বিকেল ৫টায় সামিটের টার্মিনালের মুরিং লাইন ছিঁড়ে যায়। ফলে এলএনজিবাহী কার্গো টার্মিনালটিতে ভিড়তে পারছে না। আগামী ১৫ জানুয়ারির আগে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, একটি টার্মিনাল অচল হয়ে পড়ায় দেশে এলএনজি থেকে দিনে প্রায় ১২ কোটি ১০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমেছে। সরকারের তরফ থেকে গ্যাসের এ ঘাটতিকে সাময়িক সমস্যা বলে দুঃখ প্রকাশও করা হয়েছে। দুটি টার্মিনালের সরবরাহ সক্ষমতা দিনে ১০০ কোটি ঘনফুট। গত ১৮ নভেম্বর এলএনজি থেকে ৬৪ কোটি ১০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে।
গত ২১ নভেম্বর পর্যন্ত একই সরবরাহ অব্যাহত ছিল। এর পর থেকে তা কমতে শুরু করে। ২৯ নভেম্বর ৫৬ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট ও ৩০ নভেম্বর ৫৯ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়েছে। গত শনিবার ৫২ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়। এই সরবরাহ দ্রুতই বাড়ানো কঠিন হবে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র।
পেট্রোবাংলা সূত্র আরো বলছে, সামিটের রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে যে এলএনজি মজুদ ছিল তা দিয়ে কিছুদিন গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। ফলে এ কয়েক দিন তেমনভাবে সরবরাহে ঘাটতি হয়নি। খুব দ্রুতই এই সংকটের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংস্থাটি। তবে শীতে বিদ্যুতে গ্যাসের চাহিদা কম থাকে।
তাই শিল্প বা আবাসিকে সংকট খুব ভয়াবহ হবে না বলে আশা করছে পেট্রোবাংলা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘একটি এলএনজি টার্মিনালে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এ জন্য গ্যাস বিতরণ কম্পানি ও গ্রাহকদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তবে শীতে গ্যাসের চাহিদা কমে যাওয়ায় সমস্যা প্রকট না হতে পারে।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ