বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: টানা তৃতীয়বার সরকারপ্রধান হিসেবে সম্প্রতি দায়িত্ব শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় বসার পর সুখবর পেলেন শেখ হাসিনা। বিশ্বের শীর্ষ ১০০ চিন্তাবিদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১০ বছরে বিশ্বের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১০টি বিভাগে ১০ জন করে সেরা ব্যক্তিত্ব বেছে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১০০ জনের তালিকা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী ‘দ্য ফরেন পলিসি’ বিশ্বের সেরা চিন্তাবিদদের একটি তালিকা তৈরি করেছে। সাময়িকীটি তাদের ১০ম বার্ষিকীর বিশেষ সংস্করণে এসব চিন্তাবিদের নাম ও কাজের বর্ণনা প্রকাশ করেছে। সেখানে জায়গা করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর শেখ হাসিনা তালিকায় জায়গা করে নেওয়ার কারণ হলো, গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বসবাসের জায়গা করে দেওয়া।
‘প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা’ বিভাগে জায়গা করে নিয়েছেন শেখ হাসিনা। বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি ঢুকে পড়েছেন এই তালিকায়। ১০ জনের সংক্ষিপ্ত এই তালিকায় রাশিয়ার এক কর্মকর্তার পরই আছেন শেখ হাসিনা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগী ভ্লাদিস্লাভ সুরকভ আছেন অষ্টম অবস্থানে। আর শেখ হাসিনার অবস্থান নবম।
দ্য ফরেন পলিসির করা ‘প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা’ বিভাগে সবার ওপরে আছেন ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাশেম সুলেয়মানি। তিনি দুই দশক ধরে এ ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকির জবাব দিয়ে তিনি সম্প্রতি গণমাধ্যমের নজরে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার পাশেই আছি। কিন্তু কোথায় তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। আমরা প্রস্তুত।’
এরপরে আছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওরসুলা ফন ডার লেয়ান, মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওলগা সানজেন করডেরো, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবিই আহমেদ, স্পেসএক্স-এর প্রেসিডেন্ট গুয়েনে শটওয়েল, প্যালানটিয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালেক্স কার্প, বেলিংক্যাট-এর প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক ইলিয়ট হিগিংস, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগী ভ্লাদিস্লাভ সুরকভ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র ও মৎস্যবিষয়ক মন্ত্রী সুশি পদজিয়াৎসু।
দ্য ফরেন পলিসি শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। তিনি অনেক ক্ষেত্রে তার বিরোধীদের প্রতি উদারতা কম দেখান। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দেশটির রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যা চালায়। ভয়ে বিপৎসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। রোহিঙ্গাদের দেশে আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব নেতৃত্বের দৃষ্টি কেড়েছেন তিনি। এখন শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে তৎপরতা শুরু করেছেন। নিরাপত্তার কারণে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার পক্ষগুলো রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করছে। তা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার সরকার লাখো রোহিঙ্গাকে দেশে ফেরার পথ তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছে।
‘দ্যা ফরেন পলিসি’তে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক বিবেচনায় সতর্কতার সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় চিন্তাবিদদের নির্বাচন করা হয়েছে।
দ্যা ফরেন পলিসির ওই তালিকায় ‘দ্য স্ট্রংম্যান’ বিভাগের শীর্ষে আছে জামার্নির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
‘ফোরটি অ্যান্ড আন্ডার’ বিভাগের শীর্ষে আছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্দা আরদার্ন। এ ছাড়া এই তালিকায় আরও আছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাডকার।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসের করা বিশ্বের ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় ছিলেন শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালে নভেম্বরে করা ওই তালিকায় ৩০তম অবস্থানে ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে ‘লেডি অব ঢাকা’ আখ্যায়িত করে ফোর্বস-এ বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সহায়তার অঙ্গীকার করেছেন এবং তাদের জন্য ২০০০ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছেন, যা মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির অবস্থানের পরিষ্কার বিপরীত। এই সাময়িকীর ২০১৬ সালের তালিকায় তিনি ছিলেন ৩৬তম অবস্থানে।
২০১৪ সালে এশিয়ার প্রভাবশালী শীর্ষ ১০০ জনের তালিকায় ছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান ছিল ২২তম।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি