বাংলা৭১নিউজ,(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল সুনামগঞ্জের মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম। পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রতি বছর বাড়ি, ঘর, রাস্তাঘাট বিলীন হয়। এ বছর সুনামগঞ্জে বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়কগুলো। জেলায় বেশ কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এবারের বন্যায় সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলার ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩শ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, টাকায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫০ কোটি টাকা।
জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) দেয়া তথ্যমতে, সম্প্রতি ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি ও মৌসরম এলাকায় অতিবৃষ্টির কারণে সুনামগঞ্জে গত এক মাসে দুই দফা পাহাড়ি ঢল হয়। উজানের ঢলে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে যায়। নদী উপচে সুরমার পানি ঢুকে পড়ে নদী সংলগ্ন এলাকায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়কগুলো। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর মধ্যে জামালগঞ্জ-সেলিমগঞ্জ সড়কের ১০০ মিটার, সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের কাটাখালির ২০০ মিটার, হাসাউরা মাঠগাঁও সড়কেন ৩০ মিটার, সুনামগঞ্জ-নবীনগর- ধারারগাঁও-মঙ্গলকাটা সড়কের ৪০ মিটার, ধর্মপাশা- মধ্যনগর-কলমাকানদা সড়কের ১০০ মিটার রয়েছে। এছাড়া দোয়ারাবাজার-হক নগর-বাংলা বাজার সড়কে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জাউয়াবাজার-ছাতক সড়ক এখনও পানির নিচে। এ সড়কে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ জেলার ১১ উপজেলার প্রধান ৫টি সড়ক বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ২৫ কিলোমিটারের উপর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ সড়কগুলো, যা টাকায় প্রায় ২৫ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের মধ্যে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, ছাতকের সড়কগুলো রয়েছে।
তাছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্রিজ, কালভার্টের অ্যাপ্রোচ সড়ক প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার অনেক স্থানে ওয়াশ আউট হয়ে ব্রিজ থেকে মাটি সরে গিয়ে একেবারেই যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। তিনি মঙ্গলবার জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ রাস্তাটির ক্ষতিগ্রস্ত ১০০মিটার পরিদর্শন করেন এবং দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
সুনামগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, সম্প্রতি বন্যায় ১১টি উপজেলার সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব সড়কের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এখন সেখান থেকে বরাদ্দ এলে আর পানি নেমে গেলে কাজ শুরু হবে।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বন্যায় আমাদের প্রধান সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে প্রতিবেদন আকারে পাঠিয়েছি, বরাদ্দ এলে কাজ শুরু হয়ে যাবে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, বন্যায় সুনামগঞ্জের অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি সেগুলো পরিদর্শন করছি এবং সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য বলেছি।
বাংলা৭১নিউজ/জেআই