রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মাদারীপুরে ছাত্রদল-যুবদলের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ লাদাখের অংশ নিয়ে ২ নতুন কাউন্টি ঘোষণা চীনের, প্রতিবাদেই সীমাবদ্ধ ভারত জুবায়েরপন্থিদের বিক্ষোভের ডাক, ২৫ জানুয়ারি সম্মেলনের ঘোষণা হাসপাতালে প্রবীর মিত্র, অবস্থা গুরুতর হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া পায়নি ঢাকা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ৮টি এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার দাবি মস্কোর গণঅধিকারের ফারুক হাসানের ওপর হামলা, অভিযোগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে বনানীতে চিরনিদ্রা গেলেন অভিনেত্রী অঞ্জনা মাদারীপুরে সেরা ১২ পুত্রবধূকে সম্মাননা তৈরি পোশাক রপ্তানির ছয় মাসে প্রবৃদ্ধি ১৩.২৮ শতাংশ সাদপন্থিদের ইজতেমা করার অধিকার নেই : মামুনুল হক কাশ্মিরে ভারতীয় তিন সেনা নিহত চট্টগ্রামে মাসব্যাপী ফুল উৎসব শুরু পুনরায় চালুর অপেক্ষায় সেতাবগঞ্জ চিনিকল, খুশি স্থানীয়রা ‘পুলিশ যেন জনগণের আস্থাভাজন হতে পারে, সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে’ তারেক রহমানের ৪ মামলা বাতিলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল দেশব্যাপী অভিযানে ৬০ হাজার কেজি পলিথিন জব্দ বিয়ে করেছেন তাহসান টাঙ্গাইলে ট্রেনে কাটা পড়ে দম্পতি নিহত আগামী নির্বাচন নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরির নির্বাচন : জোনায়েদ সাকি

এক সমন্বয়কের নেতৃত্বে প্রশাসন ভবনে তালা, অবরুদ্ধ শিক্ষক-কর্মচারী

রাবি প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে সকাল থেকেই আন্দোলনে নেমেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের শিক্ষার্থীরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে দুই উপ-উপাচার্যসহ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, আন্দোলনে অংশ নেওয়া অধিকাংশই রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। ফলে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কামরুজ্জামান কলেজের এইচএসসির শিক্ষার্থী মিফতাহুল জান্নাত বিভা, বারিন্দ মেডিকেল কলেজের মাহফুজা রাহাত, বেলপুকুর কলেজের সুস্মিতা, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্মী, আদর্শ অনার্স ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী মো. শুভ্র ও রাজশাহী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া তাসনিমসহ প্রায় ৩০ জন বহিরাগত শিক্ষার্থী এ আন্দোলনে অংশ নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ১ শতাংশ কোটা রাখায় আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। তবে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন করার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। সালাউদ্দিন আম্মার একাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ আন্দোলনের। এখানে অন্যান্য সমন্বয়করা নেই।

এর আগে বুধবার দুপুরে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জরুরি সভায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সন্তানদের ১ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রেখে বাকি ৪ শতাংশ কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় রাবি প্রশাসন। এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান রাবির অধিকাংশ সমন্বয়ক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার ১ শতাংশ কোটাও বাতিল করতে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছিলেন প্রশাসনকে।

ফলে সকাল ১০টা থেকে প্রশাসন ভবনে তালা মেরে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তবে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চেয়ে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৭ সমন্বয়কের মধ্যে সালাউদ্দিন আম্মারকে একাই পোষ্য কোটা বাতিলের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।

এর আগেও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচির আয়োজন করেন সালাউদ্দিন আম্মার।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী উর্মি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা কম মার্কস পেয়েও পোষ্য কোটায় ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। যা আমরা পাইনি। আমাদের ছোট ভাইবোনদের সঙ্গে এই বৈষম্য যেন না হয় সেই দাবি নিয়ে এখানে এসেছি।

বহিরাগত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, এখানে অবস্থানরত বহিরাগত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই ভর্তি পরীক্ষার্থী। যারা এর বাইরে আছেন তারা নিজেদের ছোট ভাইবোনদের জন্য পোষ্য কোটা না রাখার ও ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে সংহতি জানাতে এসেছেন।

এদিকে ১ শতাংশ পোষ্য কোটাকে যৌক্তিক দাবি করে রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ফাহিম রেজা তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, সাধারণত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা রাজশাহীর স্থানীয় বাসিন্দা হন। এ এলাকার মানুষ শত শত একর জমি এ বিদ্যাপীঠে দান করেছেন।

তারা চেয়েছিলেন এ অঞ্চলের মানুষ এবং তাদের সন্তানরা যেন শিক্ষায় অগ্রসর হতে পারেন। এদিক থেকেও তাদের এ প্রিভিলেজ দেওয়াটা অন্যায় নয়। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। এদিক থেকে প্রশাসনের ওপর বড় একটি চাপ আসবে। আমার অনুরোধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে এ সংকটে প্রশাসনের পাশে থাকবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরাসরি বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন রাবির অন্য সমন্বয়করা।

এদিকে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, তাপসী রাবেয়া হলের একজন নারী কর্মকর্তা দাপ্তরিক কাজে প্রশাসনিক ভবনে এসে আটকে গেছেন। খবর এসেছে তার বৃদ্ধা মা সংকটাপন্ন। তারপরও তাকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।

একজন ডায়াবেটিস রোগীর খাবার ঢুকতে দেয়নি। আমি সালাউদ্দিন আম্মারকে উক্ত কর্মকর্তাকে বের হতে দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি বের হতে দেবেন না বলে ফোন রেখে দেন। আমি এ ধরনের অমানবিক আচরণ থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যের নাগরিক অধিকার খর্ব করে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

উপ-উপাচার্য ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, বহিরাগত শিক্ষার্থী কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও কাউকে জিম্মি রেখে এভাবে আন্দোলন করতে পারেন না। তাদের যৌক্তিক আন্দোলন থাকতেই পারে, তবে সেটি যৌক্তিকভাবে করা উচিত বলে মনে করি, কাউকে জিম্মি করে নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে আমরা অনেক উদ্বিগ্ন রয়েছি। অনেকটা চেষ্টা করে কোটার পার্সেন্টেজ কমিয়ে নিয়ে এসেছি।

তবে সেটা শুধু এ বছরের জন্য। আগামী বছর থেকে তাদের বেতন স্কিল যদি বাড়ে তাহলে এই কোটা পুরোপুরি বাতিল হবে বলে মনে করছি। আমরা মনে করছি, একটি সমাধানের পথে চলে এসেছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কেন যে এমনটা করছে আমার বোধগম্য নয়।

তিনি আরও বলেন, এভাবে শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে কোনো আন্দোলন হতে পারে না। আমি মনে করি শান্তিপূর্ণ একটি সমাধানে আসা যেত।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com