একটি সেতুর অভাবে যুগ যুগ ধরে সাঁকোতে পারাপার হয়ে আসছে ঘিওর উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। উপজেলার বানিয়াজুরি ও নালী দুই ইউনিয়নের মধ্যেকার সীমানা দিয়ে বয়ে গেছে খিড়াই নদী। নদীর দুই পাশে ২৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। যারা বিভিন্ন প্রয়োজনে নিয়মিত এই সাঁকো দিয়ে পারাপার হন। আর বর্ষাকালে নৌকাই তাদের একমাত্র ভরসা।
সেতুর অভাবে এলাকার লোকজন আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত প্রায় ৫০ বছর যাবত। একটি মাত্র সেতু বদলে দিতে পারে এই দুই ইউনিয়নের মানুষের জীবন এবং জীবিকা। দীর্ঘদিন স্থানীয়রা সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে এবং অন্যান্য সময় সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার শিক্ষার্থী ও সাধারণ লোকজনের। এমনকি ছোট বড় দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যাও কম নয়।
এলাকাবাসী জানান, প্রতি বছর বানিয়াজুরি ও নালী ইউনিয়নের পারাপাররত কোন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা পয়সা না নিয়ে প্রত্যেকটি গ্রামের বাড়ি বাড়ি থেকে ধান, চাল, গম. ভুট্টা, পেয়াজ, সহ নানা শস্য উত্তোলন করেন। চাকুরি ও বড় ব্যবসায়ী লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এ সাঁকো তৈরি করা হয়। এ সাঁকো দিয়ে ভ্যান, মোটরসাইকেল, রিক্সা, বাইসাইকেল সহ নানা ধরনের যানবাহন পারাপার হয়।
সাঁকোটি দিয়ে পারাপারের সময় এ পর্যন্ত প্রায় ২০ জন শিশু, বৃদ্ধ ও মহিলা ব্রিজ ভেঙ্গে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে। মোটরসাইকেল চালিয়ে পারাপারের সময় নিচে পড়ে আহত হন বেশ কয়েকজন।এতকিছুর পরও টনক নড়েনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কারও।
আর কত প্রাণহানী ঘটলে ব্রিজটি হবে এটাই এখন স্থানীয়দের প্রশ্ন। স্থানীয় কেল্লাই মনসুর উদ্দিন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইস্কান্দার মীর্জা বলেন, অত্র এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় সহ ওই পারের প্রায় আড়াইশ’ শিক্ষার্থী ব্রিজ পার হয়ে স্কুলে আসে। অনেক শিক্ষার্থী বইখাতা নিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়েছে। কিন্তু ব্রিজ হলো না। তিনি দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানান।
নালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মধু জানান, খিড়াই নদীর ওপর সাঁকো এলাকার কৃষকরা কৃষি পণ্য আনা নেয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঐ এলাকার কৃষকরা পণ্য নিয়ে জেলা শহরে বা বানিয়াজুরি বাস স্ট্যান্ড আসতে যেখানে ২০ টাকা লাগার কথা সেখানে ১৫-২০ কিঃ মিঃ ঘুরে শতাধিক টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এব্যাপারে কৃষকরা ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। সাথে এ সড়কের প্রায় ৫-৬ কি.মি.রাস্তা খানাখন্দে বিভিন্ন স্থান গর্ত হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাকুর রহমান জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে একটি সেতুর প্রকল্প তৈরী করে উর্ধ্বতন দফতরে জমা দেয়া হয়েছে। বিপিপিতে নতুন ব্রীজ প্রকল্পটি প্রস্তাবনায় রয়েছে। প্রক্রিয়া শেষে, অচিরেই বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এআরকে