বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ১১:২৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে গুলি, পুলিশ বলছে ‘মিসফায়ার’ বিদেশযাত্রায় দালালের দৌরাত্ম্য কমাতে দেওয়া হচ্ছে সাজা ও অর্থদণ্ড পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অনেকাংশে সংযত করতে পেরেছি দেশে সাড়ে ১১ লাখ টন খাদ্য মজুত আছে : খাদ্যমন্ত্রী নাটোরে ঋণের চাপে স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে বিষপান কাউন্সিলরের ১০ বছরের কারাদণ্ড নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে জাইকার প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ তিন দেশ থেকে ২৮২ কোটি টাকার ইউরিয়া সার আনবে সরকার ঝড়ের কবলে পড়ে সাগরে ডুবে গেছে লবণ বোঝাই ১০ ট্রলার ভোট পড়েছে ৩০-৪০ শতাংশ : সিইসি একলাফে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা : রুমানা আলী ভারতের পররাষ্ট্র-সচিবের সফরে সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গ তুলবে ঢাকা ভাঙা রেললাইনে বস্তা গুঁজে চলছে ট্রেন কেন্দ্র দখল করতে অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণ, সংঘর্ষে আহত ১৫ বুশরা বিবিকে বাড়ি থেকে কারাগারে স্থানান্তরের নির্দেশ আমি সবসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলে যাব: প্রধানমন্ত্রী ঝিনাইদহে ৫ ঘণ্টায় ৭ ভোট! ওমরাহ শেষে দেশে ফিরলেন মির্জা ফখরুল

এই বুঝি ছেলে ফিরে এসে ‘মা’ বলে ডাকবে,এখনও পথ চেয়ে আছেন নিখোঁজ ১১ জনের স্বজন

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার প্রতীক্ষায় এখনও পথ চেয়ে আছেন নিখোঁজ ১১ যুবকের স্বজনরা। এর মধ্যে আটজনকে দুই বছর নয় মাস আগে এবং তিনজনকে প্রায় দেড় বছর আগে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়।

এরপর থেকে তারা নিখোঁজ রয়েছেন। এদের কারও মা আশায় বুক বেঁধে আছেন- এই বুঝি তার ছেলে ফিরে এসে মা বলে ডাকবে। সন্তান অপেক্ষায় আছে কখন দেখা পাবে তার বাবার। স্ত্রী অপেক্ষায় আছেন স্বামীর, আর বোন অপেক্ষায় আছেন ভাইয়ের। কিন্তু তাদের কারোর অপেক্ষার দিন পুরোয় না।

২০১৫ সালের মার্চে ৪ দিনের ব্যবধানে রাজধানীর ফকিরাপুল থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছাপাখানার দুই কর্মচারী রাজু ইসলাম ও শাওন এবং ছাপাখানার সাব ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম রুবেলকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ছয়জন ও তেজগাঁও থানার শাহীনবাগ থেকে দু’জনকে র‌্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে তাদের কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ সকালে ফকিরাপুলের বাসা থেকে মাজহারুল ইসলাম রুবেলকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন সশস্ত্র যুবক হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আটক করে নিয়ে যায়। এর ৪ দিনের মাথায় ২০ মার্চ রাতে ফকিরাপুল পানির ট্যাংকির সামনের চায়ের দোকান থেকে ছাপাখানা কর্মচারী রাজু ইসলাম ও শাওনকে ডিবি পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় দেড় বছর পার হলেও তাদের খোঁজ মিলছে না।

তাদের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, তারা থানা পুলিশের কাছে গিয়েও খোঁজ পাননি। তাদের পরিণতি কী হয়েছে তাও তাদের অজানা। এদের কারও সংসারও ভেঙেছে। রাজুর খোঁজ না পেয়ে তার স্ত্রী রুমানা দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন করে সংসার পেতেছেন।

রুমানা শনিবার বলেন, ‘এত দিনেও যখন রাজুকে ফিরে পেলাম না এজন্য তার আশা ছেড়ে দিয়েছি। আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজনও আমার খোঁজ নিত না। এ কারণে পরিবারের সম্মতিতে দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার করছি।’

শাওনের ভাই শাহীন শনিবার বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ফেনী। কয়েকবার মতিঝিল থানায় গিয়ে ভাইয়ের খোঁজ করেছি। পুলিশ শুধু আশ্বাস দিয়েছে। এখনও আমার ভাইয়ের খোঁজ পেলাম না। সে তো একজন ছাপাখানার কর্মচারী তার কেন এ পরিণতি বুঝতে পারছি না।

মাজহারুল ইসলাম রুবেলের ভগ্নিপতি মামুন রোববার জানান, রুবেলকে বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে নিয়ে যাওয়ার পর মতিঝিল থানায় জিডি করা হয়। কিন্তু পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি।

তিনি জানান, রুবেলের স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে অথৈ সাগরে পড়েছেন। তার ছোট্ট মেয়েটি জন্মানোর পর এখনও বাবাকে দেখেনি। কারণ সে পৃথিবীতে আসার আগেই তার বাবাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সাড়ে ৪ বছর বয়সী বড় মেয়ে মুনতাহ বাবার জন্য সব সময় কান্নাকাটি করে। রুবেলের মা প্রায় সময় ছেলের জন্য উদাস হয়ে বসে থাকেন।

এদিকে র‌্যাব পরিচয়ে ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ছয়জন ও তেজগাঁও থানার শাহীনবাগ থেকে দুজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে তাদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা। ঘরে বসে কান্নায় বুক ভাসাচ্ছেন কারও মা-বাবা, কারও বোন, কারও স্ত্রী বা সন্তান। প্রতিটি মুহূর্ত তারা তাদের পথ চেয়ে থাকেন।

ওই আটজন হলেন- ঢাকার সাবেক ৩৮ নম্বর (২৫) ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহীনবাগের বাসিন্দা সাজেদুল ইসলাম সুমন, তার খালাতো ভাই জাহিদুল কবির তানভীর, মুগদার আসাদুজ্জামান রানা, উত্তর বাড্ডার আল আমিন, নাখালপাড়ার মাজহারুল ইসলাম রাসেল, শাহীনবাগের আবদুল কাদের ভূঁইয়া, কায়সার আহমেদ ও আদনান চৌধুরী। এদের মধ্যে আদনান ও কায়সারকে শাহীনবাগের বাসা থেকে এবং অন্যদের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন রোববার বলেন, ‘র‌্যাব পরিচয়ে আমার ছেলেসহ ছয়জনকে একসঙ্গে ধরে নিয়ে যায়। একই দিন আরও দু’জনকে ধরে নিয়ে যায়। সেই থেকে ছেলের অপেক্ষায় বসে আছি। এই বুঝি আমার ছেলে ঘরে এসে আমাকে ডাকবে। কাঁদতে কাঁদতে পাথর হয়ে যাচ্ছি। আমার ছেলের খোঁজ পাচ্ছি না।’

তিনি জানান, সুমনের বড় মেয়ে আফসা ইসলাম রায়তা ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। কিন্তু বাবাকে না পেয়ে সে পড়ালেখা করছে না। ছোট মেয়ে আরোয়ার বয়স ৫ বছর। সেও বাবার জন্য কান্নাকাটি করে।

মাজহারুল ইসলাম রাসেলের বোন নুসরাত জাহান লাবণী বলেন, রাসেলের খোঁজ না পেয়ে তার মা মর্জিনা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায়ই কান্নাকাটি করেন। এখনও তারা সবাই প্রত্যাশা করেন রাসেল একদিন ফিরে আসবে। সেই অপেক্ষায় দিন কাটছে তাদের।

তিনি আরও জানান, রাসেল ৩৪তম বিসিএসে প্রিলিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। তার আগেই রাসেল নিখোঁজ হয়ে যান।

বাংলা৭১নিউজ/সিএইস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com