কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দ্রুত বিকাশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ‘এআই গডফাদার’ খ্যাত ব্রিটিশ-কানাডিয়ান কম্পিউটার বিজ্ঞানী জিওফ্রে হিনটন। তার মতে, এআই প্রযুক্তি ‘সম্ভবত খুব বিপজ্জনক’ হতে পারে, যদি যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা না হয়। ২০২৩ সালে গুগল থেকে পদত্যাগের পর এআই বিষয়ে হিনটনের বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন তুলে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি ভাবিনি এআই খাত এত দ্রুত বর্তমান পরিস্থিতিতে পৌঁছে যাবে। তবে ভবিষ্যতে এমনটা ঘটতে পারে বলে ধারণা করেছিলাম। ‘তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগামী ২০ বছরের মধ্যে মানুষ থেকে বেশি স্মার্ট এআই তৈরি হতে পারে, যা সমাজের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি এর ভবিষ্যৎ প্রভাবের বিষয়ে বলেন, ‘বর্তমানে আমরা যা পেয়েছি তা মানুষের বুদ্ধিকে প্রতিস্থাপন করছে। ফলে, মানুষের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিমত্তা আর ধরে রাখা সম্ভব নাও হতে পারে।’
হিনটন বলেছেন, এআই প্রযুক্তি স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিস্ময়কর উন্নতি ঘটাবে এবং বিভিন্ন শিল্পকে আরও দক্ষ করে তুলবে। তবে তিনি এর অপব্যবহার রোধে কার্যকর প্রবিধানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন।
তার মতে, ‘মানুষ যেন এ প্রযুক্তির অপব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের প্রবিধান দরকার। আর বর্তমানে আমাদের এমন কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা আছে বলে মনে হয় না। ‘তাছাড়া, এআই-এর কারণে বড় আকারে চাকরি হারানোর সম্ভাবনা এবং ধনী-গরিবের বৈষম্য বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
হিনটন বলেন, ‘ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে বড় ব্যবধান থাকা সমাজের জন্য খুবই খারাপ। এআই এমন একটি প্রযুক্তি যা মানুষের নিয়ন্ত্রণ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এটি আমাদের সবচেয়ে বড় শঙ্কা।
বাংলাদেশে এআই প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোচনা চলছে। স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি এবং শিক্ষা খাতে এআই-এর সম্ভাবনা বিশাল। তবে, এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং কর্মসংস্থান সংকট এড়াতে যথাযথ নীতিমালা ও প্রস্তুতি থাকা জরুরি।
বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে চলমান বিতর্কে জিওফ্রে হিনটনের বক্তব্য প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গভীর চিন্তার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ এআই-কে কীভাবে কাজে লাগাবে, তা নির্ভর করবে আমাদের বর্তমান পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক অঙ্গীকারের ওপর।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ