শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫ মামলায় গ্রেফতার ১০০ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ওপারে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ দুই পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতার মুক্তির দাবিতে গাজীপুরে সমাবেশ, মহাসড়কে তীব্র যানজট একদিন বিশ্বের মানুষ ভারতের ভিসার জন্য লাইনে দাঁড়াবে: মোদি নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে: মির্জা ফখরুল মামলার তদন্তে পুলিশ নয়, আলাদা সংস্থার প্রস্তাব কমিশনের দ্রুত নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে সরকার কাজ করছে তামিমের অবসর : যা বলছেন মুশফিক-রিয়াদ-শান্তরা মেঘনায় দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৩ এ কে আজাদ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হবিগঞ্জে বাস চাপায় তিন নারী শ্রমিক নিহত ‘গণমানুষের ক্যান্সার হাসপাতাল’ তৈরিতে তহবিল সংগ্রহ শুরু যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তি বাস্তবায়নে ‘কাছাকাছি অবস্থানে’ হামাস-ইসরাইল বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পলাতক আ.লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামানের সাক্ষাৎ আ.লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা ‘সময় বলে দেবে’: সিইসি ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা ৭ রোহিঙ্গা ফেনীতে আটক কিছুটা নিয়ন্ত্রণে পাঁচদিন ধরে চলা লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল

উপাচার্যের অনিয়ম: অনশনে পাবিপ্রবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

পাবনা প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১
  • ৪৭ বার পড়া হয়েছে

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর ক্ষমতার অপব্যবহারে শিক্ষকদের হয়রানি ও জুলুম-নির্যাতনের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২১ মার্চ) সকাল থেকে অনশন শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে রোববার সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে এই অনশন শুরু হয়েছে। 
অনশনকারী শিক্ষকরা জানান উপাচার্য রোস্তম আলী যোগদানের পর থেকে লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছেন।

সেসবের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকদের কথায় কথায় কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান, সাজানো অভিযোগে জিডি করা, ব্যক্তিগত চেম্বার তছনছ করা, গুণ্ডা লেলিয়ে দেয়া, ব্যক্তিগত ফাইল টানাটানি, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন, পদোন্নতি আটকে রাখা, পদাবনতির হুমকি দিয়ে চিঠি প্রদান, আইসিটি আইনে মামলার ভয় দেখিয়ে লিগ্যাল নোটিশ প্রদানসহনানাভাবে হয়রানি, জুলুম-নির্যাতন ও মানসিক টর্চার করে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।

উপাচার্যের নামে এক চাকরিপ্রার্থী প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুললে শিক্ষকরা তার তদন্ত দাবি করায় তিন শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়ে হয়রানি করেন। রিজেন্ট বোর্ডের সভায় নোট অব ডিসেন্ট দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. মো. মুশফিকুর রহমানকে হেনস্তা করেন এবং তার ব্যক্তিগত ফাইল টেনে হয়রানি করেন। 

এ ছাড়া সভায় ভিন্নমত পোষণ করায় মেয়াদপূর্তির আগেই ছাত্র উপদেষ্টার পদ থেকে অপমানজনকভাবে সরিয়ে দেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ আরিফ ওবায়দুল্লাহকে, পরিবহন প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ গালিব হাসানকে। মেয়াদপূর্তির আগে আরও সরিয়ে দেন বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্টদ্বয়কে। এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইইই বিভাগের শিক্ষক ড. দিলীপ কুমারকে ড. সাইফুল ইসলামের জুনিয়র বানিয়ে দিয়েছেন। 

অনশনে অভিযোগ করা হয়, ডিন-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করে চলেছেন। তার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইউজিসি তদন্ত শুরু করলেও থামছে না তার লাগামহীন কর্মকাণ্ড।     

তারা বলেন, তার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত তুলে ধরে তা তদন্তের জন্যে গত ৫ নভেম্বর মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও রিজেন্ট বোর্ডের সাবেক সদস্য ড. এম আবদুল আলীম ১০ দফা দাবিতে একক অবস্থান-কর্মসূচি পালন করলে উপাচার্য রোস্তম আলী তার পদোন্নতি আটকে রাখাসহ নানা হয়রানি ও নির্যাতন করে চলেছেন। শুধু তাই নয়, তার ফেসবুকের স্ট্যাটাসের প্রতিবাদ জানাতে উপাচার্য লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন পর্যন্ত দেন। 

সর্বশেষ গত সপ্তাহে আইসিটি আইনে মামলা করার হুমকি দিয়ে তাকে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এসবের প্রতিবাদে এবং প্রতিকারে অনশন-কর্মসূচি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আওয়াল কবির জয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজ (নীলদল)-এর আহ্বায়ক ড. রেদোয়ানুজ্জামান, নীল দলের সদস্য-সচিব অধ্যাপক মাসুদ রানা, সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাহিদ হোসেন, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামাল হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইয়াহিয়া ব্যাপারী, সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক সুব্রত কুমার, প্রভাষক ফাতেমা খাতুনসহ ছাত্র-ছাত্রীরা। 

জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আওয়াল কবির জয় বলেন, ‘উপাচার্য রোস্তম আলী জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই বেছে বেছে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শিক্ষকদের হয়রানি করে চলেছেন। তিনি জরুরি রিজেন্ট বোর্ড ডেকে মাত্র ১০ মিনিট সভা করে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে পদোন্নতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের নেতা ড. কামরুজ্জামান ও যুদ্ধাপরাধী সোবহান মওলানার নাতনি জামাই ড. হারুন অর রশীদসহ জিয়া পরিষদের কয়েক নেতাকে।

অথচ ভুয়া তদন্ত কমিটির অজুহাতে ভাষা-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক অন্তত ১০ খানা গবেষণাগ্রন্থের রচয়িতা ড. এম আবদুল আলীমের অধ্যাপক পদের পদোন্নতি অটকে রেখেছেন প্রায় দেড় বছর। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের অভিযোগ, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে পুনর্বাসিত করার জন্যই কি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে উপাচার্যের মতো সম্মানজনক পদে বসিয়েছেন? প্রশ্ন রাখেন তারা।’ 

ভুক্তভোগী শিক্ষক ড. এম আবদুল আলীম বলেন, ‘উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি আর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার নামে কোটি কোটি টাকা অনিয়মের তথ্যপ্রমাণ বের হতে শুরু করায় তিনি শিক্ষকদের মুখ বন্ধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এসবের প্রতিবাদ করায় তিনি আমাকে নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতন করছেন।

২০১৮ সালের একটি মীমাংসিত ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে, যার আহ্বায়ক বানিয়েছিলেন তার সাবেক ছাত্রী ও পিএসসির বর্তমান সদস্য অধ্যাপক ড. নূরজাহান বেগমকে। দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও তদন্তের রিপোর্ট না দিয়ে গত ৪ মার্চ ২০২১ অধ্যাপক নূরজাহান বেগম পদত্যাগ করেন।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিষ্পত্তি না করে নতুনভাবে হয়রানি করতে উপাচার্য তার পছন্দের এক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপককে দিয়ে তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করেছেন। উপাচার্যের ব্যক্তিগত আক্রোশে গঠন করা এই ভুয়া তদন্তের রিাপোর্ট না আসার অজুহাতে দীর্ঘ সময় আমার অধ্যাপক পদের পদোন্নতি আটকে রেখেছেন।

এখানেই শেষ নয় তার ১০১টি অনিয়ম-দুর্নীতির তালিকা তথ্য-প্রমাণ প্রকাশ করায় তিনি আমাকে আইসিটি আইনে মামলা করার হুমকি দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি যতই চেষ্টা করুন এসব ভয়ভীতি ও হয়রানি করে তার অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ থেকে আমাকে সরাতে পারনে না।’
    
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর সঙ্গে বারবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। উল্লেখ্য, উপাচার্য রোস্তম আলীর অনিয়ম-দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে মাঠে নেমেছে দুদক ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

বাংলা৭১নিউজ/এমএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com