বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গ্রাজুয়েশন প্রাপ্তিকে জনগণের অর্জন উল্লেখ করে এই উন্নয়ন সাফল্যকে ধরে রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই অর্জন যারা বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করেছেন তাদের সকলেরই এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্জন। কাজেই আমি মনে করি বাংলাদেশের জনগণই হচ্ছে মূল শক্তি। তাদেরকে আমি অভিনন্দন জানাই। আর এই জনগণই পারে সব রকম অর্জন করতে।’ তিনি বলেন, ‘এই অগ্রযাত্রাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই জনগণের উদ্দেশেই জাতির পিতা বলে গেছেন- বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। দাবায়ে যে রাখতে পারবে না সেটাই আজকে প্রমাণ হয়েছে।’
শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তোরণে তাঁকে প্রদত্ত সংবর্ধনা এবং এই উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
অ্যাডহক ভিত্তিতে পরিকল্পনা না নিয়ে ৫ বছর মেয়াদি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং ১০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণেই বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারের থেকে পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছি। কিন্তুু যারা কাজ করেছে আমার কৃষক, শ্রমিক, মেহেনতি মানুষ থেকে শুরু করে আমাদের পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা প্রত্যেকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে তাঁরা কাজ করেছে।
তিনি বলেন, যারা কাজ করেন তাঁরা কিন্তু সরকারের মনভাবটা বুঝতে পারেন। আর সেটা বুঝেই তারা কাজ করেন। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। কাজেই সরকার যখন আন্তরিকতার সঙ্গে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে তখন তাঁরাও অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলেই আজকে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৮ ভাগে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি।
সরকার প্রধান বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা আর পরমুখাপেক্ষী নেই। শতকরা ৯০ ভাগ নিজেদের অর্থায়নে আমরা বাজেট করতে পারি। যে বাজেট অতীতের থেকে চারগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এই কাজগুলো সফলভাবে করার জন্য তিনি সকলকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে সকল উন্নয়ন সহযোগী এবং বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর প্রতিও ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, সকলের সহযোগিতাতেই আজকে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) আয়োজনে অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সভাপতিত্ব করেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফজিতা ম্যানুয়েল কাতুয়া ইউতাউ কমন বক্তৃতা করেন। এউএনডিপি অ্যাডমিনিষ্ট্রেটর আসীম স্টেইনারের একটি লিখিত বার্তাও অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়।
ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আজম স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশ থেকে উত্তোরণের সুপারিশপত্রের রেপ্লিকা প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একটি স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করেন। এ সময় ডাক, টেলিয়োগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যাস সুন্দর সিকদার এবং ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার মন্ডল উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এরপর একটি ৭০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোট অবমুক্ত করেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ফজলে কবির এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্যপ্রতিমন্ত্রী তরানা হালিম, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মালেক এবং প্রধান তথ্য কর্মকর্তা বেগম কামরুন্নাহার প্রধানমন্ত্রীর হাতে ৭০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির একটি ফটো অ্যালবাম তুলে দেন।
এরপরই শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর পালা। সকল শ্রেনী পেশার মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ, জাতীয় সংসদের স্পীকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীসভার সদস্যগণ, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা, ১৪ দল, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, তিনবাহিনী প্রধানগণ, পুলিশ বাহিনী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী সমাজ, শিক্ষাবিদ,ব্যবসায়ী সমাজ, সাংবাদিক সমাজ, কবি ও সাহিত্যিক গণ, শিল্পী সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন, মহিলা সংগঠন, এনজিও প্রতিনিধি দল, ক্রীড়াবিদ, শিশু প্রতিনিধি দল (স্কাউট, গালর্স গাইড, বিএনসিসি), প্রতিবন্ধী প্রতিনিধি দল, শ্রমজীবী সংগঠন এবং মেধাবী তরুণ সমাজের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গ্রাজুয়েশনে পৃথক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান- জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেজ, বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম, এডিবি প্রেসিডেন্ট তাকেহিকে নাকাও, ইউএসএআইডি অ্যাডমিনিষ্ট্রের মার্ক গ্রিন এবং জাইকার প্রেসিডেন্ট শিনিচি কিতাওকা।
এছাড়া দেশের খেটে খাওয়া মেহেনতি মানুষের পক্ষ থেকেও ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো হয়।
মন্ত্রী পরিষদ সদস্যগণ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যগণ, রাজনৈাতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, তিনবাহিনী প্রধানগণ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনিতিকবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ,ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, শিল্পীসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কাউন্সিলের উন্নয়ন নীতিমালা বিষয়ক কমিটি (কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি-সিডিপি) গত ১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে তাদের ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় এবং পরের দিন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেনের কাছে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি হস্তান্তর করে।
গত বছরের অক্টোবরে ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন ট্রেড এ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (ইউএনসিটিএডি) এক রিপোর্টে বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই তিনটি শর্ত পূর্ণ করায় চলতি মার্চ মাসে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করবে।
এই তিনটি মানদন্ড- হচ্ছে মাথাপিছু জাতীয় আয় (জিএনআই), মানবসম্পদ সূচক, হিউম্যান অ্যাসেটস ইনডেস্ক (এইচএআই) এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা, ইকোনমিক ভালনারেবিলিটি ইনডেস্ক (ইভিআই)।
জাতিসংঘের এই মানদন্ড অনুযায়ী একটি দেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় (জিএনআই) হবে ১,২৩০ ডলার অথবা আরো বেশী। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শেষে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় দাঁড়িয়েছে ১,৬১০ ডলার।
এই উত্তরণে একটি দেশের এইচএআই সূচক অবশ্যই ৬৬ অথবা বেশী এবং ইভিআই ৩২ অথবা নিচে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সূচক যথাক্রমে ৭২ দশমিক ৯ এবং ২৪ দশমিক ৮।
এই তিনটি মানদন্ডের মধ্যে দুটি মানদন্ড পূরণ করলেই হয়, কিন্তু বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বে প্রথম দেশ যে তিনটি মানদন্ডই পূরণ করেছে।
এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশের চূড়ান্তভাবে উত্তরণের জন্য ২০২৪ সালে জাতিসংঘের ঘোষণা পর্যন্ত তিনটি সূচকের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
এই অর্জনের পেছনে অনেক বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অর্জনের কথাগুলো যত সহজে তিনি বললেন সময় কিন্তু তত সহজে যায়নি। অনেক চড়াই উৎড়াই যেমন পার হতে হয়েছে তেমনি গ্রেনেড হামলাসহ তার ওপর বারংবার হত্যা প্রচেষ্টাও করা হয়েছে বলেও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি রূপক অর্থে বলেন, অনেক পথের কাঁটা পায়ে বিঁধিয়েও এগিয়ে যেতে হয়েছে। বারবার আঘাত এসেছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি সেই গ্রেনেড হামলা থেকে শুরু করে বারবার মৃত্যুকে দেখেছি, কিন্তু ভয় পাইনি কখনো।
যে দেশে তাঁর বাবা, মা-ভাইদের হত্যাকান্ডের বিচারের পথকে রুদ্ধ করার জন্য খুনীদের ইনডেমনিটি দেয়া হয়, তারা স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায়, ভোট চুরি করে এমপি হয়, রাষ্টপতি পদপ্রার্র্থী হবারও সুযোগ পায়- সেখানে তিনি ভয় কেন পাবেন, পাল্টা প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনে যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশকে গড়ে তুলে তাঁকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যান। আজকে সেখান থেকে বাংলাদেশকে তাঁর সরকার উন্নয়শীল দেশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও জাতির পিতা বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত দেশের পর্যায়ে চলে যেতে পারতো। আগামী ২৬ তারিখ আমাদের স্বাধীনতার ৪৭ বছর পূর্ণ হবে, আমাদেরতো অনেক দিন লেগে গেল, বলেও আক্ষেপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী এসময় বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে বলেন, আমি জানি না আমার বাবা আজ বাংলাদেশের মানুষের এই অর্জনগুলো তিনি পরপার থেকে দেখতে পাচ্ছেন কি না। নিশ্চয়ই বাংলাদেশের এই অর্জনে লাখো শহীদের আত্মার পাশাপাশি তাঁর বাবার আত্মাও শান্তি পাবে, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অগ্রযাত্রাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। এই যাত্রাপথ যেন থেমে না যায়। আমরাতো যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করে দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা কেন পিছিয়ে থাকেবো? অন্যের কাছে কেন হাত পেতে চলবো? আমরা যে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি সেটাতো আজকে আমরা প্রমাণ করেছি।’
বাবার কাছ থেকে তাঁর শেখা রাজনীতির মূল শিক্ষাই জনকল্যাণ উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা। নিজের জন্য নয়, নিজের ভোগ বিলাস নয়, জনগণ যাতে একটু ভালো থাকে, সুখে থাকে, সেটাই লক্ষ্য। যে লক্ষ্য বাস্তবায়নেই তাঁর নিরন্তর পথ চলা। কাজেই যতটুকু অর্জন এর সব কৃতিত্বই বাংলার জনগণের।
জনগণের কাছ থেকে সাড়া না পেলে তাঁদের সহযোগিতা না পেলে, তারা যদি ভোট দিয়ে নির্বাচিত না করতো তাহলেতো ক্ষমতায়ও আসতে পারতেন না, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আজকের এই উন্নয়নের ধারাটা যেন অব্যাহত থাকে সেটাই কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ আমাদের লক্ষ্য মধ্যম আয়ের দেশ, দেশকে যেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্য মুক্তভাবে গড়ে তুলতে পারি। আর ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করবো। আর সেই সময়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলায় তা আমরা উদযাপন করতে পারবো।
আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার মহাসংগ্রামে তিনি ততদিন বেঁচে থাকবেন কি না সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও আজকের যারা নতুন প্রজন্ম, দেশকে তারাই এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে দৃঢ় আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের করাচী থেকে প্রকাশিত ডন পত্রিকার একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে পূর্ববাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক ও বেসামরিক খাতে বৈষম্যেও চিত্র তুলে ধরে বাঙালির অধিকার আদায়ে জাতির পিতার আন্দোলন-সংগ্রাম ও কারা নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার বক্তৃতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘জাতির পিতার আকাক্সক্ষা ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। বাংলার মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এটাই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। তাই বঙ্গবন্ধু সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন সাধারণ মানুষের ভাগ্য ফেরানোর জন্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন গত ১৭ মার্চ ছিল জাতির পিতার ৯৯তম জন্মদিন। ঐদিন আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের এই সুসংবাদটি পাই। জাতির পিতার জন্মদিনে আমাদের জন্য এর চেয়ে বড় উপহার আর কী হতে পারে! ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক আমাদের নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি দেয়। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সনদ পেল।’
তিনি বলেন, এতদিন অনেকেই আমাদের গরীব বলে উপহাস করেছে। এক সময় বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে কটাক্ষ করেছে। কিন্তু আজকে আমরা তাদের কাতারে উঠে এসেছি। এ অর্জন আন্তর্জাতিক মহলে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং আমাদের অবস্থান শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বল্পোন্নত বা গরীব বলে কেউ আর অবজ্ঞা করতে পারবে না।
পরে প্রধানমন্ত্রী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন। সূত্র: বাসস।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস