বাংলা৭১নিউজ রিপোর্ট: ঈদ উপলক্ষে টানা ছুটির ফাঁদে পড়ে রফতানি পণ্য জাহাজীকরণ থমকে আছে। ঈদুল আযহার ছুটি শেষ হওয়ার সাথে সাথেই এসব পণ্য জাহাজীকরণের চাপ বাড়বে। ঈদের এক সপ্তাহ পর যেসব পণ্য রফতানি হবে, ঈদ ছুটির পূর্বেই ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল থেকে চট্টগ্রামের ১৮টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোয় এনে রফতানিযোগ্য এসব পণ্য রাখা হয়েছে। এত করে বেশির ভাগ ডিপোতেই রফতানি পণ্যের কনটেইনার জট তৈরি হয়েছে।
কনটেইনার ডিপো মালিক সমিতির হিসাবে, সবগুলো ডিপো মিলে কনটেইনার রাখার স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ৬৫ হাজার ইউনিট। এরই মধ্যে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত কনটেইনার এনে রাখা হয়েছে ডিপোগুলোয়। গত শনিবার পর্যন্ত ডিপোগুলোয় আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী কনটেইনার ও খালি কনটেইনারের সংখ্যা ৬৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি ডিপোতে পণ্যভর্তি কনটেইনার ছিল ১৫ হাজারটি। বেশকিছু ডিপোর সামনে অন্তত ৩৫০-৪০০টি রফতানি পণ্য ভর্তি কাভার্ড ভ্যান অবস্থান করছে।
ঈদ উপলক্ষে এবার রফতানিমুখী কারখানাগুলোয় আট থেকে ১০ দিনের ছুটি চলছে। বেশির ভাগ কারখানায় ছুটি শুরু হয়েছে গত শুক্রবার থেকে। কারখানা খুলবে ১৮ আগস্ট। ছুটির সময় যেসব পণ্য রফতানি হওয়ার কথা সেগুলো এরই মধ্যে চট্টগ্রামের ডিপোতে পাঠিয়ে দিয়েছেন রফতানিকারকরা। তাতেই এ জট তৈরি হয়েছে।
বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, ঈদের লম্বা ছুটিতে যাতে রফতানি পণ্য জাহাজীকরণে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য রফতানি পণ্য আগেভাগে ডিপোতে পাঠিয়ে দেন রফতানিকারকরা। আশা করছি, পণ্য যাতে ঠিকভাবে সময়মতো রফতানি হতে পারে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা গুরুত্ব দেবেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্যমতে, বন্দর দিয়ে রফতানি হওয়া পণ্যের ৯০ শতাংশই ১৮টি ডিপোতে কনটেইনার বোঝাই করে জাহাজে তুলে দেয়া হয়। বাকি ১০ শতাংশ কমলাপুর ডিপো এবং রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল থেকে কনটেইনারে করে বন্দরে পাঠানো হয়।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান চাপ মোকাবেলায় বন্দর কর্তৃপক্ষও পোশাক শিল্পের রফতানি পণ্য জাহাজে তুলে দেয়ার ক্ষেত্রে সময়সীমা শিথিল করেছে। পোশাক শিল্পের রফতানি পণ্যের জন্য আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই শিথিলতা থাকবে। এ সময়ে কোনো জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার তিন ঘণ্টা আগে ওই জাহাজের রফতানি পণ্যের কনটেইনার বন্দরের ভেতরে নিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় বন্দরে প্রবেশের সুযোগ থাকবে না।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, ঈদকে কেন্দ্র করে এখন ডিপোগুলোতে রফতানি পণ্যের চাপ বেড়েছে। অনেকগুলো ডিপোর সামনে রফতানি পণ্যবাহী গাড়ি পৌঁছার পরও তা খালাস করে কনটেইনারে বোঝাই করতে তিন-চারদিন লেগে যাচ্ছে।
এদিকে প্রতি বছর ঈদের সময় রফতানি পণ্যের চাপ বাড়লেও সে অনুযায়ী ডিপোর সংখ্যা বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। তাদের মতে, প্রয়োজনের তুলনায় কম ডিপো থাকায় কনটেইনার জট তৈরি হচ্ছে। এতে সময়মতো পণ্য রফতানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।
তবে কনটেইনার ডিপো মালিক সমিতির সচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, ‘ডিপোতে রফতানি পণ্যের চাপ মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক কাজ হচ্ছে। আশা করছি, রফতানি পণ্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই জাহাজে চলে যাবে।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ