বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: রাজধানীর শপিং মল ও বিপণিবিতানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এমন কেনাকাটা চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত।
নানান রং-ডিজাইনের পোশাকের সমারোহ দোকানে দোকানে। তবে বিশেষ বিশেষ পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বরাবরের মতো। বিশেষ করে ভারতীয় বিভিন্ন ছবি ও সিরিয়ালের কোনো কোনো চরিত্রের পোশাকের একটা ক্রেজ তৈরি হয় প্রতি ঈদে। এবারের ঈদে যেমন তরুণীদের ‘ক্রেজ’ বজরঙ্গি ভাইজান।
ভারতীয় একটি ছবির নামকরণে এই ভারতীয় পোশাকটি দখল করেছে বাংলাদেশের ঈদ বাজার। নতুন ডিজাইনের এ পোশাকেই যেন সব আকর্ষণ তরুণীদের।
এ ছাড়া এবারের ঈদে দেশি পোশাকের চেয়ে বিদেশি পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের ঝোঁক বেশি দেখা যাচ্ছে।
অবিজাত শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতের বাজারগুলোতে বেশ চাহিদা এই বজরঙ্গি ভাইজান পোশাকের। বিভিন্ন মার্কেট ও মানভেদে পোশাকটির দামের তারতম্য রয়েছে। নিউমার্কেটে পোশাকটি পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। বসুন্ধরায় পাঁচ হাজার থেকে নব্বই হাজার টাকার মধ্যে কেনা যাবে।
সোমবার বিকেলে ঈদ বাজারের খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মল গমগম করছে ক্রেতার সমাগমে। দোকানে দোকানে নানা বয়সী ক্রেতার ভিড়। বজরঙ্গি ভাইজান, বাজিরাও মাস্তানি এবং সারারা নামের ভারতীয় পোশাক ক্রেতারা বেশি কিনছেন।
পলি আক্তার ঈদের কেনাকাটা করার জন্য বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে এসেছেন তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। এ সময় বজরঙ্গি ভাইজান পোশাক কিনে দেওয়ার জন্য বায়না ধরে মেয়ে। কিন্তু এই পোশাকটি কিনে দিতে নারাজ তিনি। শেষে মেয়ের বায়নার কাছে হার মেনে তাকে বজরঙ্গি ভাইজানই কিনে দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমার ইচ্ছে ছিল তাকে দেশীয় পোশাক কিনে দেব। কিন্তু সে কিছুতেই মানছে না। তাকে বজরঙ্গি ভাইজান কিনে দিতেই হলো। ভারতীয় পোশাক ট্রেন্ড এখন সবখানে ছড়িয়ে গেছে। তার সব বান্ধবী এই পোশাক কিনেছে, তাই তাকেও কিনে দিতে হলো।”
স্টাইল গালর্স-এর বিক্রয় প্রতিনিধি আলিফের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, “এবারের ঈদ বাজারে দেশি পোশাকের তুলনায় বিদেশি পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি বুটিকসের কাপড়ও কিনছেন অনেকে। এবারের ঈদে বজরঙ্গি ভাইজানের পাশাপাশি বাজিরাও মাস্তানি, সারারা, লেহেঙ্গা আফসানা নামের ভারতীয় পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে।”
আলিফ আরও বলেন, বাজিরাও মাস্তানি পোশাক পাঁচ পিস, তিন পিস ও এক পিসের হয়। এক পিসেরগুলো গাউনের মতো। পাঁচ পিসের এ পোশাক লেহেঙ্গা বা সালোয়ার-কামিজ- দুভাবেই পরা যায়। এ কারণে ক্রেতারা এ পোশাক বেশি পছন্দ করছে।
এদিকে অভিজাত শপিং মলগুলোর পাশাপাশি ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে গুলিস্তানের রেলওয়ে হকার্স সুপার মাকের্টে। এ মার্কেটেও পাওয়া যাচ্ছে স্বল্প দামের নানা বাহারি পোশাক। ফ্লোর টাচ, সারারা, জলনূপুর নামের অনেক দৃষ্টিনন্দন পোশাক পাওয়া যাচ্ছে এখানে। এক হাজার থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে এসব পোশাক।
তানজুম ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মনির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, “ঈদ উপলক্ষে বেচাকেনা অনেক ভালো। ক্রেতাদের মধ্যে কেনাকাটার একটা উৎসাহ লক্ষ করা যাচ্ছে। বড় বড় শপিং মলগুলোতে পোশাকের দাম অনেক বেশি হওয়াতে ক্রেতারা আমাদের এসব দোকান থেকে কেনাকাটা করছে।”
অন্যদিকে ক্রেতারা ভারতীয় পোশাকের আধিক্যে নিম্নমানের পোশাকে বাজার সয়লাব হওয়ার অভিযোগ করেন।
ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা করছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাজারে মানসম্মত পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না। মানের তুলনায় বিক্রেতারা দাম অনেক বেশি নিচ্ছেন।
তবে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেন বিক্রেতারা।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস