নরসিংদীর পলাশে চাঁদা না দেওয়ায় দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় বাঁচাতে গেলে তাদের মা ও বাবাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। সোমবার (৩১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে পলাশ উপজেলার কর্তাতৈল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তবে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন জানিয়েছেন, চোর সন্দেহে দুইজনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এতে তাদের মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, অটোরিকশার ব্যাটারি চুরিকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত। পরে রাতে নিহত সাকিব ও তার ভাই রাকিব লোকজন নিয়ে কর্তাতৈল এলাকায় গেলে মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে গ্রামবাসী গণপিটিুনি দিলে তাদের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সদর ফাঁড়ির পুলিশ হাসাপাতাল পরিদর্শন করেন।
নিহত সাকিব মিয়া (২০) ও তার ভাই রাকিব পলাশের কর্তাতৈল গ্রামের আশরাফ উদ্দিনের ছেলে। এসময় আহত হয়েছেন আশরাফ উদ্দিন ও তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন।
নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন, রাকিব ও তার বাবা আশরাফ উদ্দিন আদম ব্যবসা করেন। তাই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। কিন্তু তারা চাঁদা দিতে রাজি হননি। এরইমধ্যে সোমবার ঈদ উপলক্ষে সাকিব ও তার বন্ধুরা ঘুরতে বের হন। তারা কর্তাতৈল এলাকায় বেড়াতে গেলে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা চালায়। ওই সময় সাকিবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে তারা।
খবর পেয়ে ভাই রাকিব ও তার মা-বাবাসহ স্বজনরা ঘটনাস্থলে যান। ওই সময় দুর্বৃত্তদের বাধা দিতে গেলে রাকিব ও তার মা-বাবাকে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
পরে তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় রাকিব ও তার মা-বাবাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ঢাকায় নেওয়ার পথে রাকিব মারা যান। তার মা-বাবাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে পলাশ থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, চোর সন্দেহে পলাশের বাঘদি গ্রামের লোকজন সকালে একজনকে গণপিটুনি দিয়েছে। পরে রাতেও চোর সন্দেহে কয়েকজনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠানোর পর চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহত ৩ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর কেউ মারা গেছে কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারিনি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে