বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মালয়েশিয়ায় সড়কে প্রাণ গেলো বাংলাদেশির আজই কারামুক্ত হবেন ডেসটিনির রফিকুল আমীন-হোসেন, আশা আইনজীবীর ট্রাম্পকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্বীকার করলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাড়ে ৫ কোটি লিটার ভোজ্যতেল কিনছে সরকার টিউলিপ ও পুতুলের বিরুদ্ধে আরও দুর্নীতির অনুসন্ধান নির্বাচনের আগে ট্রায়াল কোর্টে বিচারের আশা আসিফ নজরুলের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য মাসে ৩ হাজার টাকা দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সামনে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিশন গঠন ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংস্কার প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা গাজীপুরে দিনব্যাপী ‘মার্সেল ডিস্ট্রিবিউটর সামিট-২০২৫’ মারা গেছেন সাবেক আইজিপি আজিজুল ৩ কোটি টাকা মূল্যের শো-রুমের গাড়ি নিয়ে লাপাত্তা : গ্রেপ্তার ৫ দেশের ইতিহাসে প্রথম গোয়েন্দা জাহাজ উন্মোচন করল ইরান প্রাথমিকে শিক্ষক বদলি শুরু, চলবে মার্চ পর্যন্ত ক্যান্সার আক্রান্ত গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেওয়ার বিধান বাতিলের প্রস্তাব ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু তাবলিগ জামাতের সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা বান্দরবানে ৭ শ্রমিককে অপহরণ

ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেওয়ার বিধান বাতিলের প্রস্তাব

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপলোড সময় বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত ছয় কমিশনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে চার কমিশন। এগুলো হলো-নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন। বুধবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কমিশন প্রধানরা এসব প্রতিবেদন জমা দেন। এতে ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেওয়ার বিধান বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাকিগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসন আরও সময় নেবে। আর বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি রিপোর্ট জমা দেবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

সংবিধান : একনায়কতন্ত্র ঠেকাতে বা এক ব্যক্তির হাতে যাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত না হয়, সেজন্য ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন। এক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার সুপারিশ এসেছে। সংসদের নিম্নকক্ষে আসন থাকবে ৪০০।

এর মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তারা নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে। আর উচ্চকক্ষে আসন থাকবে ১০৫টি। নির্বাচন হবে আনুপাতিক পদ্ধতিতে। সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট আসন হবে ৫০৫টি। নির্বাচন হবে বর্তমান পদ্ধতিতে। 

পুলিশ: রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী পুলিশকে প্রাণঘাতী অস্ত্র না দেওয়া, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করাসহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরের শাসনামলে পুলিশকে ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছিল। দলের অনুগত কর্মীদের মতো কাজ করেন কিছু পুলিশ কর্মকর্তা।

তাদের জন্য লোভনীয় পোস্টিং, যোগ্যদের পাশ কাটিয়ে পদোন্নতি ও দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়া হয়। জুলাই-আগস্টের বিক্ষোভের সময় নির্বিচারে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে পুলিশ, যার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। এজন্য প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে এ সুপারিশ করা হয়। এছাড়া পুলিশের নিয়োগ, পদোন্নতি এবং নজরদারি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ রয়েছে।

নির্বাচন কমিশন : নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার আইন পরিবর্তনের সুপারিশ রয়েছে। আইনের পাশাপাশি নির্বাচনি আচরণবিধিতেও স্পষ্ট পরিবর্তন এনে কঠোর তদারকির সুপারিশ রয়েছে। আদালতের রায়ে গণভোট ও তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা ফেরার পথ খুলছে।

বিদ্যমান নির্বাচন পদ্ধতির পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি সুপারিশ করেছে কমিশন। ‘সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ, অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেওয়ার যে বিধান রয়েছে, তা বাদ দিতে বলা হয়েছে। 

দুদক : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারে কয়েকটি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। প্রথমত নিয়োগ প্রক্রিয়া। দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। এ কারণে তারা বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না।

এই নিয়োগ সংস্কারে সুপারিশ করেছে। দ্বিতীয়ত আইনি ক্ষমতা। বর্তমান আইনে দুদকের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। ফলে আইন সংশোধন জরুরি। দুদকের আরেকটি অন্যতম দায়িত্ব হলো-উচ্চপর্যায়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

কিন্তু উচ্চপর্যায়ে যারা অর্থ পাচারের মতো অপরাধ করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের মধ্যে সমন্বয়ের ব্যাপক ঘাটতি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। 

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের এক মাস তিন দিনের মাথায় গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বহুল আলোচিত ছয়টি খাত সংস্কারে সুনির্দিষ্ট কমিশনের ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের প্রধান করা হয় সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে। পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। পরবর্তী তিন মাস অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সুপারিশ জমা দিতে বলা হয়।

তবে গত ৪ জানুয়ারি রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হয়। এক্ষেত্রে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের মেয়াদ ৩১ জানুয়ারি এবং অন্য পাঁচটি কমিশনের মেয়াদ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এই সময়সীমার মধ্যে আজ রিপোর্ট দিচ্ছে চার কমিশন।

এরপর ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে সরকার। চূড়ান্ত পর্যায়ে শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শ সভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com