বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: ইসরায়েলের সাথে কি বেশ কয়েকটি আরব দেশের এক গোপন মৈত্রী গড়ে উঠছে?
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার আলোকে সাংবাদিক-বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব মোকাবিলা করতে বেশ কিছু মধ্যপন্থী সুন্নি আরব দেশগুলোর সাথে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠছে।
ব্যাপারটা নিয়ে সবচেয়ে স্পষ্টভাবে সম্প্রতি রিপোর্ট করেছে মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস। ‘গোপন আঁতাত: কায়রোর সম্মতি নিয়ে মিশরের ভেতরে বিমান হামলা চালালো ইসরায়েল’ – এই শিরোনামে রিপোর্টটি লিখেছেন ডেভিড ডি ফিটজপ্যাট্রিক।
এতে তিনি ‘বিস্ময়কর এবং অতিশয় গোপন এক সামরিক সম্পর্কের’ খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন।
তিনি লিখছেন, গত দু বছরে ইসরায়েলের অচিহ্নিত ড্রোন, হেলিকপ্টার এবং জেট বিমানগুলো শতাধিক হামলা চালিয়েছে মিশরের সিনাই এলাকাতে।
কখনো কখনো এমনও হয়েছে যে এক সপ্তাহেই একাধিক বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এবং এগুলো চালানো হচ্ছে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসির সম্মতি নিয়েই।
এসব হামলা চালানো হচ্ছে সিনাইতে সক্রিয় ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের ওপর।
মিশরীয় বাহিনীও এদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে, সবশেষ অভিযানে ১৬ জন জঙ্গী নিহত হয়েছে। মি. আল-সিসি এ মাসের মধ্যেই সিনাই থেকে জঙ্গীদের নির্মূল করার ওপর জোর দিয়েছেন।
মিশরের সাথে ইসরায়েলের শান্তি চুক্তি রয়েছে ১৯৭৯ থেকেই, কিন্তু তাদের মধ্যে কোন রকম সহযোগিতার কথা খুব কমই স্বীকার করা হয়, বিমান হামলার তো বহু দূরের কথা।
ডেভিড ফিটজপ্যাট্রিকের রিপোর্টের মূল কথা হলো, সিনাইয়ের ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে মিশরীয় বাহিনী এবং এ জন্য তারা ইসরায়েলের সাহায্য চেয়েছে।
সিনাইকে জঙ্গী-নিয়ন্ত্রণমুক্ত করাটা দু’তরফের জন্যেই লাভজনক – কারণ এতে ওই এলাকায় মিশরের নিয়ন্ত্রণ ফিরে আসবে – আর ইসরায়েলেরও সীমান্ত নিরাপদ হবে।
বিবিসির বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস লিখছেন, নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টটি বের হবার পর মিশরের ভাষ্যকাররা অবশ্য একে ‘ফেক নিউজ’ এবং ‘অপেশাদার সাংবাদিকতা’ বলে আখ্যায়িত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মিশরের সামরিক মুখপাত্রও ইসরায়েলি সহযোগিতার কথা অস্বীকার করেছেন।
এটা বোধগম্য যে ব্যাপারটা সত্যি হলে তা মিশরের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর ব্যাপার হবে।
তবে এখন যদি মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে একে দেখা হয় – তাহলে দেখা যায় এগুলোর সাথে আরব-ইসরায়েলি গোপন সহযোগিতার এই খবরটা বেশ মিলে যাচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:বিবিসি বাংলা/এসএস