বাংলা৭১নিউজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে পল্লী বিদ্যুতের ইলেকট্রিশিয়ান কোটিপতি শিরোনামে সংবাদ প্রচারের পর তদন্ত শুরু করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। গত ৮ ও ৯ এপ্রিল অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিল্কসিটি নিউজসহ বিভিন্ন অনলাইন ও অন্যান্য পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হয় উপজেলার বজরাটেক স্কুলপাড়ার শুকুর(তেলী)’র ছেলে ভোলাহাট পল্লী বিদ্যুৎ সাব- জোনের ইলেকট্রিশিয়ান এমাজুদ্দিন কোটিপতি। এর প্রেক্ষীতে পল্লী বিদ্যুতের চাঁপাইনবাবগঞ্জ কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। দলটি সরজমিন তদন্ত করেছে বৃস্পতিবার(১২ এপ্রিল)।
তদন্ত দলে ছিলেন এজিএম এমএস রাফিকুল ইসলাম ও বিসিএল প্রকৌশলি সনাথ বাবু। এ’ছাড়াও সংবাদ প্রচারের পর ৮এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্মরত সকল ইলেকট্রিশিয়ানকে অফিসে প্রবেশে নিষেধাক্কা জারি করেছেন। অপরদিকে গ্রাহকের সব ধরনের কাজ গ্রাহক নিজে অফিসে এসে করবেন বলে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর আশরাফুল হককে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জিএম অফিস ১০ এপ্রিল তলব করেছেন বলেও নির্ভযোগ্য সূত্র জানায়। উল্লেখ্য ৮ ও ৯ এপ্রিল অনলাইন ও বিভিন্ন সংবাদপত্রে উপজেলার বজরাটেক স্কুলপাড়ার শুকুর (তেলী)’র ছেলে ইলেকট্রিশিয়ান এমাজুদ্দিন ২০০৮ সালে ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে লাইসেন্স নিয়ে কাজ শুরু করেন।
পরে অসাধূ কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাযোসে গ্রাহক হয়রানি করে সংযোগ খরচ সাড়ে ৭শত টাকার স্থানে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগে ২০১৫ সালে বিভিন্ন গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে তার লাইসেন্স বাতিল হয়। পরে আবার ঘুঁটির জোরে লাইসেন্স নিয়ে আবারও অর্থ বাণিজ্য শুরু করেন এমাজুদ্দিন। এ ভাবে অবৈধ অর্থের পাহাড় গড়েছেন। ২ বিঘা জমি ক্রয় করেন ১২ লাখ টাকায়, আলিসান বাড়ী করেন মাটি ক্রয়সহ প্রায় ৫০ লাখ টাকায়, আমবাগান ক্রয় করেন ৫০ লাখের উপরে।
বিষয়টি এলাকাবাসিরও নজর কাড়ে। তার এত টাকার উৎস কোথায়। সে তো একজন ইলেকট্রিশিয়ান মাত্র। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ কোন গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে গেলে আবেদন ফরমে ও জমির দলিলের ফটোকপির উল্টোদিকে এমাজুদ্দিনের নোট পাওয়ার পর ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর আশরাফুল হক বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমোদন দিয়ে থাকেন। এক কথায় এমাজুদ্দিন ছাড়া গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ হবে না।
এছাড়া ৮ ও ৯ এপ্রিল সংবাদ প্রচারের পর এমাজুদ্দিনের বাড়ীতে পল্লী বিদ্যুতের বৈদ্যুতিক তারসহ ইলেকক্ট্রিক সামগ্রী অফিসের সামনে গোপনে ফেলে দিয়ে যায়। এদিকে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ক্ষতিয়ে দেখারও দাবী উঠেছে। এ সংবাদ প্রকাশের পর পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছেন। তদন্তে আসা এজিএম এমএস রাফিকুল ইসলাম জানান, অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিল্কসিটি নিউজসহ প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ইলেক্ট্রিশিয়ান এমাজুদ্দিনের ব্যাপারে তদন্তে সরজমিন এসেছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের এখনও বাঁকী আছে। এখন পর্যন্ত অভিযোগের কিছু সত্যতার আভাস পেয়েছেন বলে জানান। তার দূর্নীতি অনিয়মের জন্য লাইসেন্স বাতিলেরর বিষয়ে তিনি অবগত আছেন বলেও জানান। তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান। এ ব্যাপারে ভোলাহাট পল্লী বিদ্যুৎ সাব-জোন অফিসের এজিএম সোহেল রানা জানান, তার অফিসের সামনে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারগুলো কোথায় ছিলো তা তার জানা নাই। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে সরজমিন তদন্তে এসেছিলে এর সত্যতা স্বীকার করেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস