শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে লিফলেট বিতরণ এবার কারও পক্ষ নিয়ে কাজ করলে অসুবিধা হবে : কর্মকর্তাদের সিইসি অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মির্জা ফখরুল ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি শেখ হাসিনার দুর্নীতি খুঁজে বের করতে টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি ‘বৃহত্তর ইসরাইলের’ মানচিত্র প্রকাশ, আরব দেশগুলোর কড়া প্রতিবাদ বিমানবন্দরে রক্তাক্ত সেই প্রবাসীকে জরিমানা, হতে পারে জেলও ৩০ জুনের আগেই মহার্ঘভাতা ঘোষণা মানিকগঞ্জে ডিসির রুমের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান দাবি মানার আল্টিমেটাম দিয়ে ‌‌শাহবাগ ছাড়লেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা শরীয়তপুরে থানা থেকে ওসির মরদেহ উদ্ধার নিক্সন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা লেনদেন শহীদ মিনারের পর শাহবাগ অবরোধ বিডিআর সদস্যের স্বজনদের জেনেভা ক্যাম্পের আলোচিত সন্ত্রাসী চুয়া সেলিম গ্রেপ্তার মা‌র্কি‌নিদের হয়ে ঢাকায় বিশেষ দা‌য়িত্ব সামলাবেন ট্র্যাসি জ্যাকবসন বিসিএসে বাদ পড়া ২২৭ জনের বেশিরভাগই চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন রাশিয়ায় বিমানবাহিনীর তেলের ডিপোয় ইউক্রেনের হামলা হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে বরিশালকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো রংপুর

‘ইমিউনিটি’ গড়ে তোলা ছাড়া বাংলাদেশে উচ্চ মানের লকডাউন সম্ভব না

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় সোমবার, ৪ মে, ২০২০
  • ৬২ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে ভাইরাস শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

♦গার্মেন্টস খুলে দেয়ার প্রভাব পড়বে ১২ই মে থেকে

♦দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দিলে আক্রান্তের হার আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছিল আটান্ন দিন আগে। আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মোট শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দশ হাজারের ওপর।গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ৬৮৮, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হওয়া রোগী।

বাংলাদেশের শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে করোনভাইরাস মহামারির প্যার্টান বা আক্রান্তের সংখ্যা নির্দেশকারী গ্রাফে এর ওঠানামার চিত্রটা দেখলে দেখা যাবে, বিশে এপ্রিল ৪৯২ জনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। তারপর দৈনিক আক্রান্তের এই হার ওঠানামা করে এখন ৬শ’য়ের কোঠায় পৌঁছেছে।

“মাঝে এই সংখ্যা ৫০০র ঘরে ছিল, এখন তা ছয়শ’র ঘরে এসে গেছে। দিনে দিনে এই কার্ভটা (গ্রাফে আক্রান্তের রেখাচিত্র) উঠে যাচ্ছে। সমস্ত ইনফেকটেড লোকের ৫৫% ঢাকা সিটিতে। আর সব আক্রান্তের ৮৭% ঢাকা বিভাগে।”

তিনি বলেন, বিশেষ করে ঢাকায় সংক্রমণের বিষয়টা ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে।”ইনফেকশনটা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে, সেটা যে সহসা কমবে তার কোন (লক্ষণ) নেই”।তিনি বলেন, গত ২৮শে এপ্রিল গার্মেন্টস খুলে দেয়া হয়েছে এবং এর কী প্রভাব পড়বে তা “আমরা পাওয়া শুরু করব ১২ই মে থেকে”।

দোকানপাটও এতদিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেবার যে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, অধ্যাপক ইসলাম মনে করছেন তার প্রভাবে এই গ্রাফ আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে।

কবে এই আশংকা কাটবে?

সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশের মানুষও গভীর উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করছে কবে তারা এই শঙ্কা-মুক্ত হবে।অধ্যাপক ইসলাম মনে করছেন এই সংক্রমণ যদি অব্যাহত থাকে তাহলে “হার্ড ইমিউনিটি” না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।”হার্ড ইমিউনিটি- অর্থাৎ কিছু লোক মারা যাবে, এবং অনেক মানুষ ইমিউন (প্রাকৃতিকভাবে ভাইরাস প্রতিরোধী) হয়ে যাবে।”

মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠলে তবেই এই ভাইরাস থেকে ব্যাপক সংক্রমণের আশঙ্কা চলে যাবে বলে তিনি মনে করছেন। তবে এখানে সতর্ক হবার কারণও রয়েছে বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন।

“এই ভাইরাস যদি এর মধ্যে মিউটেট করে (আচরণ পরিবর্তন করে), তাহলে কিন্তু তা নাও হতে পারে। কারণ মিউটেট করলে সেটা নতুন ভাইরাসে পরিণত হয়ে যাবে।

“সেক্ষেত্রে ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট যেটা আমরা এখন করছি, সেটাও আবার তখন কাজে লাগবে কি না তাও জানা নেই,” ব্যাখ্যা করেছেন অধ্যাপক ইসলাম।

ঢাকায় লকডাউনের মধ্যে কাজে যাচ্ছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। চৌঠা মে ২০২০লকডাউনের মধ্যে গার্মেন্টস খুলে দেবার একটা প্রভাব ফেলতে পারে সংক্রমণের হারের ওপর – মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার মানে হল কৃত্রিম উপায়ে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। তবে কেউ যদি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে থাকে তাহলে স্বাভাবিক নিয়মে তার শরীরে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে, বলছেন তিনি।

‘ইমিউনিটি ছাড়া আমাদের আর কোন অস্ত্র নাই’

তার মতে, এই ভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটির ওপর ভরসা করেই থাকতে হবে। কারণ বাংলাদেশে উচ্চ মানের লকডাউন আরোপ করা সম্ভব না।

“আমরা চেষ্টা তো করলাম এক মাস ধরে। পারছি না তো। সবাই চেষ্টা করেছে। পুলিশ চেষ্টা করেছে, আর্মি চেষ্টা করেছে, ভলান্টিয়াররা চেষ্টা করেছে। আমরা পারছি না।”

তিনি বলছেন বাংলাদেশে এই রোগ মোকাবেলার একমাত্র উপায় যে মানুষের মধ্যে ইমিউনিটি তৈরি হওয়া, সরকারকে সেটা মানতে হয়ত বাধ্য হতে হবে। অধ্যাপক ইসলাম বলেন আমেরিকা বা ইতালিতে কর্তৃপক্ষ যেভাবে লকডাউন কার্যকর করতে পারে, বাংলাদেশ সেভাবে এই লকডাউন কার্যকর করতে পারছে না।

“বাংলাদেশে মানুষজনের যে বিহেভিয়ার‍্যাল প্যার্টান (আচরণের ধরন) আর বাংলাদেশ সরকারের যে সক্ষমতা, এই দুটা যদি আপনি চিন্তা করেন, তাহলে বাংলাদেশের সরকার এইরকম আচার-ব্যবহারওয়ালা জনগোষ্ঠিকে প্রকৃতভাবে লকডাউন করাতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।”

এদিকে, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বাংলাদেশের সরকার আজই “সাধারণ ছুটির” মেয়াদ ষষ্ঠবারের মত বাড়িয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আলাদা দু’টি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ “শর্তসাপেক্ষে সাধারণ ছুটি বা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বর্ধিতকরণ” শিরোনামে এই প্রজ্ঞাপন বলেছে আগামী ১৪ই মে পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়েছে।

এই সময়ে এক জেলা ও উপজেলা থেকে অন্য জেলা ও উপজেলায় চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বন্ধ থাকবে সব আন্তঃজেলা গণপরিবহন। দুটো প্রজ্ঞাপনেই বলা হয়েছে যে ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির সময় কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে না।

জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করবে বলে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের অনেকেই সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছেবাংলাদেশের অনেকেই সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

অধ্যাপক ইসলাম বলছেন সরকার অবশ্যই চেষ্টা করছে, কিন্তু তিনি মনে করেন “সরকারের সক্ষমতার একটা থ্রেসহোল্ড আছে অর্থাৎ এর বেশি সরকার সক্ষম না।”

তিনি বলছেন সে কারণেই সংক্রমণের হার দিনে দিনে বেড়েই যাচ্ছে, যদিও বাড়ার হার কম, কিন্তু তিনি বলছেন গ্রাফে সংক্রমণের হার স্থিতিশীল মাত্রায় আসছে না বা গ্রাফে সংক্রমণটা সমান্তরাল রেখায় পৌঁছেছে তেমনটা দেখা যাচ্ছে না।

অধ্যাপক ইসলাম বলছেন গার্মেন্টস খোলার পর এবং দোকানপাট খুলে দেবার পর ১২ই মে থেকে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তবেই বোঝা যাবে এই গ্রাফ সমান্তরাল রেখায় পৌঁছে, সেখান থেকে নিচের দিকে নামার কোন ইঙ্গিত দিচ্ছে কি না।

“সেটাই হবে আমাদের আলটিমেট অবস্থা। এরপর আমাদের আর করণীয় কিছুই নেই। গ্রাফ যদি তখনও ওঠানামা করতে থাকে তাহলে ‘হার্ড ইমিউনিটি” ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই, যদি না এর মধ্যে কোন ভ্যাকসিন চলে আসে,” বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

বাংলা৭১নিউজ/তথ্যসূত্র: বিবিসি অনলাইন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com