বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ন্যায্য পাওনা আদায়ের দাবিতে ইনকিলাব কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়া চাকরিচ্যুত সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিষ্ঠানটির ভবনের উপর থেকে ও অাশেপাশ থেকে বহিরাগতরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। ময়লা-আবর্জনা ও ময়লা পানি ফেলে বহিরাগতরা।
হামলায় ডিআরইউ সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাংবাদিক নেতা জোসনা, হাবিব, হুমায়ুন, শামীম চৌধুরীসহ আহত হয়েছেন ১২ জন। এ নিয়ে ঘটনাস্থলে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ও ডিআরইউ।
ঘটনাস্থল থেকে হামলায় আহত ডিআরইউ সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, বহিরাগতরা সন্ধ্যার পর হঠাৎ হামলা চালায়। তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। ময়লা-আবর্জনা ও ময়লা পানি ফেলে। ডিইউজের ব্যানার টেনে ছিঁড়ে ফেলে। হামলায় আমিসহ ১০/১২ জন আহত হয়েছেন। শামীম চৌধুরী গুরুতর আহত হয়েছেন, তাকে ইট ও রড দিয়ে পেটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এ ঘটনায় মর্মাহত, ক্ষুব্ধ। অবশ্যই এ ঘটনা তীব্র অান্দোলন করা হবে। চাকরিচ্যুত সাংবাদিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা না দেয়ার জন্যই এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
শাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, অন্য সব সাংবাদিক সংগঠনকে জানানো হয়েছে। বিএফইউজে এবং ডিইউজে ও ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ আসছেন। ইতোমধ্যে ওমর ফারুক ও সোহেল হায়দার চৌধুরী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ওয়ারি থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। কে বা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে সাবান মাহমুদসসহ সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দৈনিক ইনকিলাবের চাকরিচ্যুত সাংবাদিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্যালয়টি অবরুদ্ধ রেখেছেন সাংবাদিকরা। বিএফইউজে এবং ডিইউজে এ কর্মসূচি আয়োজন করে।
গত মঙ্গলবার বিএফইউজে সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও মহাসচিব ওমর ফারুক, ডিইউজে (একাংশ) সভাপতি শাবান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী যুক্ত বিবৃতিতে ইনকিলাব সম্পাদককে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। অন্যথায় অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
সাংবাদিক নেতা ওমর ফারুক বলেন, বকেয়া বেতন এবং অন্যান্য সুবিধাদি পরিশোধের জন্য ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। বাহাউদ্দীন নেতৃবৃন্দের ফোন পর্যন্ত ধরেন না। ঈদুল আজহাতে কোনো টাকাই দেয়নি ইনকিলাব। চাকরিচ্যুতরা ঈদ উদযাপন করতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার ডিইউজের সভাপতি শাবান মাহমুদের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, বিএফইউজের যুগ্ম-মহাসচিব অমিয় ঘটক পুলক, সাব-এডিটর কাউন্সিলের সভাপতি কে এম শহীদুল হক, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ওবায়দুর রহমান, ডিউইজের সাংগঠনিক সম্পাদক মো, শাহজাহান মিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল, সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য ওসমান গণি বাবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি এম এম জসিম, সাংবাদিক এইচ এম মুর্শেদ, রমজান আলী প্রমুখ।
গত ৩০ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত ইনকিলাব থেকে শতাধিক সাংবাদিক-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়। ২৬ মাসের বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনাদি ইনকিলাব সম্পাদক তার মনগড়া হিসাব করে তার তিনভাগের একভাগ নিয়ে সকল পাওনা বুঝে পেলাম মর্মে তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। তাতে রাজি না হওয়ায় এই ছাঁটাই করে ইনকিলাব কর্তৃপক্ষ।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে দুই সংগঠনের সাংবাদিকরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বিকেল ৫টায় বিএফইউজের (একাংশ) মহাসচিব ওমর ফারুক পাওনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস