জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ‘১৯৯১ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছর যাবত বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী নারী। তবুও নারী কোথাও নিরাপদ নয়। নারী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে সর্বশেষ ইডেন কলেজের ঘটনায় নারীদের মর্যাদা যেভাবে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা আধুনিক বিশ্বে কল্পনারও অযোগ্য। এত বড় ভয়ংকর ঘটনা ঘটে গেলেও সরকার ন্যূনতম পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেনি।’
শুক্রবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক নারী জোটের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী পদ নারীদের জন্য সংরক্ষিত। তারপরও রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক ক্ষেত্রসহ নারীরা সব ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার। নারীর নাগরিক অধিকার ও আইনি সমতা আজও নিশ্চিত হয়নি।’
রব বলেন, পরিবার ও সমাজে শুধু মানুষ হিসেবে নারীকে গণ্য করার সংস্কৃতিও বিকশিত হয়নি। নারীর প্রতি সব প্রকার বৈষম্য বিলোপে ‘সিডও’ একমাত্র আন্তর্জাতিক চুক্তি বা সনদ। কিন্তু তার অধিকাংশই ‘বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে না’।
‘এই বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তন, সংবিধান সংস্কার, বিদ্যমান স্বৈরাচারের পতন এবং রাষ্ট্র রূপান্তরের লক্ষ্যে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে দেশের নারী সমাজকে অংশগ্রহণের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন নারী জোটের সভাপতি তানিয়া রব। উত্তরা বাসভবনে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন- নারী জোটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দা ফাতেমা হেনা, ফারজানা দিবা, সুরাইয়া তাবাসসুম, তাসলিমা আক্তার, ফারিয়া আলম ঊষা, ইয়াসমিন দিলশাদ, মাহমুদা চৌধুরী শাহিন, সাফিকা আফরোজা তালুকদার, রেহানা সুলতানা, কৃপা ভূঁইয়া ও শারমিন সুলতানা প্রিয়াঙ্কা প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে তানিয়া রব বলেন, ‘জনগণের সম্মতিবিহীন বর্তমান সরকার সমাজ ও রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে নারীর অধিকার ও মর্যাদার সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’তিনি বলেন, ইডেন কলেজের ঘটনায় ‘সরকার কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে’ প্রমাণ করেছে, এই সমাজে নারী কত অসহায়।
তিনি বলেন, ‘চরম অবমাননাকর অবস্থায় নিপতিত নারী সমাজকে আজ জাগ্রত হতে হবে। নারীকে বুঝতে হবে তার দুর্দশার সব কারণ এই বৈষম্যমূলক ও অমানবিক রাষ্ট্র যন্ত্রের মধ্যেই নিহিত। এজন্য প্রতিরোধের আগুন ছড়িয়ে রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে হবে।’
তানিয়া রব আরও বলেন, ‘গত ৩ দশক যাবত নারীরা রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকলেও নারীমুক্তির ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়নি। কারণ তারা নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন না। নারীর প্রকৃত মুক্তির লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সব পর্যায়ে নারীর নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। সে লক্ষ্যে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সমাজতান্ত্রিক নারী জোটকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’
বাংলা৭১নিউজ/এবি