মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা বিশ্ব ইজতেমার মাঠ ছাড়ার পর সরকার ওই মাঠের দায়িত্ব নেবে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর সাদ অনুসারী মাওলানা রেজা আরিফ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বিশাল জনসংখ্যা নিয়ে তারা (জুবায়ের অনুসারী) মাঠের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আগে থেকে সেখানে আমাদের (সাদ অনুসারী) অনেক লোকজন জড়ো হয়েছেন। সরকারের অনুরোধে আমরা মাঠ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যাতে কোনোরকম সমস্যা তৈরি না হয়।
মাঠ ছেড়ে দেওয়ার জন্য সাথী ভাইসহ সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে রেজা আরিফ বলেন, মাঠ ছেড়ে দিয়ে আমরা কামারপাড়া রোড দিয়ে পশ্চিম পাশের মারকাজের কাছ দিয়ে যার যার মতো করে চলে যাবো। কামারপাড়া দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের সহযোগিতা করবেন।
রেজা আরিফ বলেন, এখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে সরকার মাঠের দায়িত্ব নিয়ে নেবে, কেউ মাঠে থাকবেন না।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের পর মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ক ম খালিদ হোসেন বৈঠক করেন।
সাদ অনুসারীদের উদ্দেশ্যে রেজা আরিফ বলেন, কেউ কারও সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলবেন না, কোনো রকম ক্যাজুয়ালটি যেন না হয়, কোনো রকম মারামারি যেন না হয়, কোনো রকম সমস্যা যাতে না হয়।
তিনি বলেন, আমাদের সাথিরা এখনই মাঠ ছাড়া শুরু করুন। আর ওনাদের (জুবায়ের অনুসারী) প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মাঠ ছেড়ে দিচ্ছি। উনারাও যেন ইসলামের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে কোনো রকম সমস্যার চেষ্টা না করেন। উনারাও যেন রাস্তার মধ্যে নেমে না আসেন এবং কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার না করেন।
মাওলানা সাদপন্থি এ আলেম বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে কে দায়ী সেটি জরুরি নয়, অবশ্যই মুসলমান হিসেবে এবং দেশের নাগরিক হিসেবে দুঃখ প্রকাশ করছি। যাই হয়েছে, এটা একেবারে অনুচিত হয়েছে । মুসলমান-মুসলমান মারামারি, তাবলিগের সাথিরা-সাথিরা মারামারি, এটা একেবারেই ঠিক হয়নি। এজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে যাতে এমন কোনো কর্মকাণ্ড আর না হয়, সেই চেষ্টা থাকবে।
এর আগে ভোরে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- বাচ্চু মিয়া (৭০), তাইজুল (৬৫) ও বেলাল (৬০)। বাচ্চু মিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামে। বেলালের বাড়ি ঢাকার দক্ষিণ খানের বেড়াইদ এলাকায় ও তাইজুল ইসলাম বগুড়া জেলার বাসিন্দা।
এরপর জুবায়ের অনুসারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন উপদেষ্টারা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ