সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সমুদ্রপথে হজযাত্রী পাঠানোর প্রস্তাবে সৌদি সরকারের সম্মতি রাব্বী হত্যা মামলায় ঢাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার সেপ্টেম্বরে সড়কে ঝরেছে ৪২৬ প্রাণ, ৪২ শতাংশই মোটরসাইকেলে দুর্নীতি কিছুটা কমেছে, চাঁদাবাজি তেমন একটা কমেনি হাইকোর্টে আপিল শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: অ্যাটর্নি জেনারেল নেত্রকোণায় ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ, ৪টি ইউনিয়নে কংসের পানি চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের ২ বিজ্ঞানী দুর্গাপূজায় স্কুল-কলেজ টানা ১১ দিন ছুটি ৮ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি শিউলি আজাদ উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি চায় এনজিওগুলো: দেবপ্রিয় চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আসিফ রহমানের সঙ্গে গোলাম পরওয়ারের সাক্ষাৎ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত ম্যাক্রোঁর অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বানে চটেছেন নেতানিয়াহু কোটা উঠিয়ে লটারির মাধ্যমে রাজউকের প্লট বরাদ্দের প্রস্তাব গণপূর্ত উপদেষ্টার সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেনকে ১০ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ চৌধুরী নাফিজ সরাফতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আমি কোনো দুর্নীতি করিনি : মাদকের ডিজি শুধু মেগা প্রজেক্ট নয়, সবুজায়ন বাড়াতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিমের তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ইউনাইডেট হাসপাতালের অবহেলা তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা:
  • আপলোড সময় রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

গালফ এয়ারের পাইলট মোহাম্মদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মৃত্যুর ঘটনায় ইউনাইডেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চিকিৎসায় অবহেলা ছিল কি না- সে বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (১৬ জুলাই) হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর রাতে ইউসুফ হাসান আল হিন্দি ঢাকার মেরিডিয়ান হোটেলে ছিলেন। দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে তিনি ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত হয়ে বের হয়ে যান। ভোর ৪টার দিকে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্নের সময় অসুস্থ হলে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি পরপর চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হন। এরপর ১৫ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে মারা যান ইউসুফ হাসান।

গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মোহান্নাদ ইউসুফ আল হিন্দির বোন তালা এলহেনডি এমন দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তালা এলহেন্ডি জানান, ভাইয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পর তিনি বাংলাদেশে ছুটে আসেন। ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে তাকে অসহযোগিতা করা হয় এবং দেরি করে কাগজপত্র দিলেও সেখানে জালিয়াতি করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

তিনি দাবি করেন, মূলত তাকে হত্যা করা হয়েছে। এজন্য তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চান এবং ইউনাইটেড হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলের দাবি করেন। নিজের কর্মস্থল গালফ এয়ারও সময়মতো তার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারেনি বলেও দাবি করেন তিনি।

তালা এলহেনডি আরও বলেন, চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সময় তাকে ওষুধ প্রয়োগ করে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছেন, আমার ভাইয়ের চিকিৎসা করেছেন ডা. কায়সার নাসির। কিন্তু আমার ভাইয়ের পরিবারের কাছে চিকিৎসার যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে তার নাম পাওয়া যায়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমার ভাইয়ের অ্যাজমা ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেছে যে ভুল করে এটা বাদ পড়ে গেছে। ফোনে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। তিনি সশরীরে রোগীর কাছে উপস্থিত ছিলেন না।

তিনি বলেন, ভোর পৌনে ৬টায় আমার ভাইকে সিসিএমে স্থানান্তর করা হয়। এটির নাম কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট। ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে সেখানে অন্তত একজন কার্ডিওলজিস্ট ও তাৎক্ষণিক বিশেষ সেবা দেওয়ার দরকার ছিল। কিন্তু অদক্ষ চিকিৎসকরা অবহেলা করেছেন। কার্ডিওলজি কেয়ারের জন্য একটি ইউনিট করা হলেও সেখানে কোনো কার্ডিওলজিস্ট ছিলেন না।

‘সকাল পৌনে ৭টায় দ্বিতীয় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় আমার ভাইয়ের। ২০ মিনিট পর তৃতীয় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট করেন তিনি। দুই ঘণ্টার ব্যবধানে আমার ভাইয়ের তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। কোনো কার্ডিওলজিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ঢাকা শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিশেষজ্ঞ ইউনিট আবার ব্যর্থ হয়েছে, যা সিসিএম কর্মীদের নিছক ও চরম অবহেলা ছাড়া কিছু না।

তারা একমাত্র যে পদক্ষেপটি নিয়েছে, তা হলো আরিএসসি-এর সঙ্গে ১৫ মিনিট সিপিআর করেছে। আমার ভাই তৃতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট করলে সোয়া দুই ঘণ্টা পর্যন্ত তাকে কোনো চিকিৎসাসেবা ছাড়াই ফেলে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।’ বলেন তালা এলহেনডি।

তিনি বলেন, কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্ট ট্রিটমেন্টের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর চিকিৎসক আমার ভাইকে হেপারিন সোডিয়াম ৫০০০ আইইউ ইনজেকশন দিয়েছেন। রক্তজমাট বাঁধা বন্ধ করতে এটি দেওয়া হয়। এতে আরও পরিষ্কার হয়ে উঠেছে যে, রোগীর চিকিৎসায় সেখানে কোনো কার্ডিওলজিস্ট ছিলেন না। কাজেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাদে সাধারণ কর্মীদের পরামর্শ ছিল চরম অবহেলা।

তিনি বলেন, বেলা সোয়া ১১টায় চিকিৎসা চলার মধ্যেই আমার ভাইয়ের চতুর্থ ও শেষবারের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। তাকে ৪৫ মিনিট সিপিআর দেওয়া হয়। টিপিএম বসানোর পরেই তিনি মারা যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ডা. কায়সার নাসির এসব প্রক্রিয়া করেছেন। কিন্তু তিনি কোনো কার্ডিওলজিস্ট কিনা তাও পরিষ্কার না।

কারণ চিকিৎসার কাগজপত্রে তার নাম উল্লেখ নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, এটা ভুল হয়েছে। একজন জ্যেষ্ঠ কনসালটেন্ট (ডা. কায়সার উল্লাহ ও অন্য কনসালটেন্টরা) এনজিওগ্রাম করেছেন বলে তারা জানান। কিন্তু রিপোর্টে তাদের নাম নেই। আর কেন কোনো সারসংক্ষেপ রিপোর্ট নেই জানতে চাইলে তারা বলেন, এগুলো অভ্যন্তরীণ কাগজপত্র। একজন কার্ডিওলজিস্ট আমার ভাইয়ের চিকিৎসায় পরামর্শ দিলেও তিনি হাসপাতালে সশরীরে ছিলেন না।

‘আমি পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে পেয়েছি যে, সিসিটিভি ফুটেজ ও হাসপাতালের কাগজপত্রে কারসাজি করা হয়েছে। এছাড়া আমি যখন অনুসন্ধান করছিলাম, তখন হাসপাতালের কর্মীরাও আমাকে ভয় দেখিয়েছেন। গত ২৬ জানুয়ারি, ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে আমি চিকিৎসার কাগজপত্র ও সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রমাণাদি কারসাজি করতে তারা এসব দিতে তিনদিন সময় নিয়েছিল।’

তালা এলহেনডি বলেন, তাদের কাছে যখন জানতে চাচ্ছিলাম, তখন তারা আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করেন ও রূঢ় ব্যবহার করেন। এরপর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি ও দূতাবাসকেও এ বিষয়ে জানানো হবে বললে তারা আমাকে বিস্তারিত কাগজপত্র দিয়েছেন। কিন্তু এজন্য তারা তিনদিন সময় নিয়েছেন। এসময়ে সব কাগজপত্র কারসাজি করা হয়েছে।

তারা কোনো কোনো তথ্য গোপন করেন, আবার কোনোটি যুক্ত করেন। এসব কাগজপত্রকে তারা হাসপাতালের সম্পত্তি বলে দাবি করলেও তা অন্য চিকিৎসকের কাছে রয়েছে জানিয়ে আমাকে দিতে বিলম্ব করে। তারা বলেছিল, ওই চিকিৎসকের ফুরসত মিললেই আমাকে কাগজপত্র জমা দেওয়া হবে। এভাবে তারা আমাকে তিনদিন অপেক্ষায় রেখেছেন। এমনকি দীর্ঘ বিলম্বের পরও রোগীর হৃদকম্পন পরীক্ষার ২০টি পাতা দিয়েছেন তারা আমাকে। কিন্তু তাতে সঠিক কার্ডিওলজি রিপোর্ট কিংবা চিকিৎসার বিস্তারিত তথ্য ছিল না।

এদিকে, এই ঘটনায় গত ১৪ মার্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে মামলা করেন নিহত পাইলটের বোন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তালা এলহেনডি জোসেফানো। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

বাংলা৭১নিউজ/এসএম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com